২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে হাওড়ার অধিকাংশ ব্লকে পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশনের টাকা আসেনি। আর তার জেরে উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। আবার যে কয়েকটি ব্লকে টাকা এসেছে, তাও বরাদ্দের থেকে কম। ফলে সেখানে কাজ শেষ করতে অসুবিধা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য অর্থ কমিশনের টাকা প্রতি বারে অনিয়মিত ভাবেই আসে। যেহেতু এটাই পঞ্চম অর্থ কমিশনের শেষ বছর, তাই হয়তো টাকা পেতে একটু দেরি হচ্ছে। টাকা এসে যাবে।’’
২০১৯ সাল থেকে প্রতি আর্থিক বছরে রাজ্য সরকার জেলার ব্লকগুলিতে এই টাকা পাঠায়। পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে সঙ্গে টাকা পায় পঞ্চায়েতগুলিও। পঞ্চায়েত সমিতি বছরে গড়ে এক কোটি এবং পঞ্চায়েতগুলিকে গড়ে বছরে প্রায় তিরিশ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয় বলে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর।
এ বার সমস্যা হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের টাকা নিয়ে। এই টাকা দেওয়া হয় দু’টি কিস্তিতে। একটি কিস্তি আসে অগস্ট-সেপ্টেম্বরে এবং দ্বিতীয় কিস্তি অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই দিয়ে দেওয়ার কথা।
সেই হিসেবে ২০২৫ সালের মার্চে পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা মে মাসেও আসেনি। এই টাকায় নিকাশি, রাস্তাঘাট, কমিউনিটি হল প্রভৃতি করা হয়। এর জন্য আগাম পরিকল্পনা করে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে পাঠাতে হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা খরচ করতে হয়।
হাওড়া জেলায় মোট পঞ্চায়েত সমিতি ১৪টি আর ১৫৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত। জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে, টাকার আশায় অনেক কাজ আগাম করে হয়েছিল। কিন্তু বরাদ্দ না মেলায় ঠিকা সংস্থাগুলিকে পাওনা মেটানো যাচ্ছে না।
আবার যে দু’একটি ব্লক টাকা পেয়েছে, তার পরিমাণ এতটাই কম যে উন্নয়নমূলক কাজ কাটছাঁট করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে ব্লক প্রশাসন। যেমন উলুবেড়িয়া-১ ব্লক গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছে। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বরাদ্দের যে হিসাব ধরা আছে তার থেকে ৩০ শতাংশ কম টাকা এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘টাকা আসবে ধরে নিয়ে কাজ হয়ে গিয়েছে। কম টাকা আসায় কাকে কী ভাবে পাওনা মেটানো হবে, তা নিয়ে বেশ সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’
তবে জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার আশ্বাস, ‘‘বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে জানানো হয়েছে। টাকা শীঘ্র এসে যাবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)