E-Paper

দুই অসুস্থের মৃত্যু, ডায়েরিয়ার আশঙ্কা বলাগড়ে

হুগলির বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের রায়পাড়ার এই ঘটনায় মৃতেরা হলেন মাতাল টুডু (৫৫) ও গুণী কিস্কু (৬৫)।

বিশ্বজিৎ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৩৬
পুকুরের জল ব্যবহার না করার জন্য ব্যানার টাঙানো হয়েছে বলাগড়ের রায়পাড়ায়।

পুকুরের জল ব্যবহার না করার জন্য ব্যানার টাঙানো হয়েছে বলাগড়ের রায়পাড়ায়। — নিজস্ব চিত্র।

গ্রামের বহু মানুষ বমি-পায়খানার উপসর্গ নিয়ে শনিবার রাত থেকে ভর্তি হচ্ছিলেন হাসপাতালে। তার মধ্যে সোমবার মৃত্যু হল দু’জনের। হুগলির বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের রায়পাড়ার এই ঘটনায় মৃতেরা হলেন মাতাল টুডু (৫৫) ও গুণী কিস্কু (৬৫)। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, পাড়ার পুকুরের দূষিত জল ব্যবহার করেই সকলে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

তবে স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি মানতে নারাজ। জেলা স্বাস্থ্য অধিকর্তা মৃগাঙ্কমৌলি করের দাবি, ‘‘এই জোড়া মৃত্যুর সঙ্গে ডায়েরিয়ার কোনও যোগ নেই। গুণীর শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়াম কম ছিল। মাতাল টুডুর শরীরে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। এই থেকে মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান।’’

যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন সদর মহকুমাশাসক স্মিতা শুক্লা সান্যাল, বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। নলকূপের জলের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩৪ জন অসুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে কালনা হাপাতালে ৭ জন ও জিরাট হাসপাতালে ৫ জন ভর্তি ছিলেন। অন্যেরা বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন।

ট্যাঙ্কের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে।

ট্যাঙ্কের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র।

মাতালের স্ত্রী বাসন্তীর কথায়, ‘‘এলাকার পুকুরের জলে কাপড় কাচা, বাসন মাজা,স্নান— সব চলে। সেখান থেকেই মনে হয় কিছু হয়েছে। নলকূপের জলও ভাল নয়।’’ তিনি জানান, এক বছরের নাতি সহ দুই ছেলে ও এক বৌমাও পেটের অসুখে ভুগছিলেন। কিন্তু তাঁরা আপাতত সুস্থ।

স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ, স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘একটা গ্রামে ৪০ জন পেট খারাপ, বমি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তার তো একটা কারণ রয়েছে! সেটা স্বাস্থ্য দফতর গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না।’’

বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার নিকাশি নালার জল গিয়ে পুকুরে পড়ে। ফলে সেই জল সংক্রমণের আশঙ্ক উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পঞ্চায়েতের তরফে পুকুর চত্বরে ওই জল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, তিনটি নলকূপের হাতল খুলে বস্তা দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। পরিবর্তে ট্যাঙ্কের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অসুস্থদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন আশাকর্মীরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Diarrhea Death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy