E-Paper

গ্রামীণ হুগলিতেও ডেঙ্গি, গাপ্পি চাষ শুরু উত্তরপাড়ায়

শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা জানান, শহরের ১৮ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে গত মঙ্গল ও বুধবার ফিভার ক্লিনিক চালানো হয়।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ ০৬:৫৮
হুগলী-চুঁচুড়া পুর এলাকায় বিভিন্ন নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া হল।

হুগলী-চুঁচুড়া পুর এলাকায় বিভিন্ন নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া হল। —নিজস্ব চিত্র।

গত কয়েক বছর ধরেই হুগলিকে ভাবাচ্ছে ডেঙ্গি। গত বছরও হুগলি শিল্পাঞ্চলে ডেঙ্গি দাপিয়েছে। এ বারেও বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গির খবর মিলছে। নানা পরিকল্পনা করে মশাবাহিত এই রোগ প্রতিরোধে নেমেছে পুরসভাগুলি।

গত বছর উত্তরপাড়ায় বহু মানুষ সংক্রমিত হয়েছিলেন। এখানে এ বার গাপ্পি মাছের চাষ শুরু করেছে পুরসভা। সব শহরেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে জ্বরের হিসাব লিপিবদ্ধ করছেন পুরকর্মীরা। বাড়িতে বা আশপাশে জল জমে থাকছে কি না, নজরে রাখছেন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে জেলায় ডেঙ্গিতে সংক্রমিত হয়েছিলেন ৯ জন। চলতি সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩। তার মধ্যে চণ্ডীতলা-১ ব্লকে ১১ জন। হরিপাল এবং বলাগড় ব্লকেও কয়েক জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। শ্রীরামপুর পুর এলাকাতেও কয়েক জন সংক্রমিত হয়েছেন। গত বছরেও এই শহরে ডেঙ্গি দাপিয়েছে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়া জানান, জেলার সব বড় হাসপাতাল এবং গ্রামীণ হাসপাতালেও ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে। যে সব গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি সংক্রমণ হচ্ছে, সেখানে ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।

শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা জানান, শহরের ১৮ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে গত মঙ্গল ও বুধবার ফিভার ক্লিনিক চালানো হয়। বৃহস্পতিবার প্রতি ওয়ার্ডের নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে। গত বছর চুঁচুড়াতেও ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল। এখানেও এ দিন নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়। পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী জানান, রাজ্য সরকারের দেওয়া ৩০ হাজার গাপ্পির চারা ৩০টি ওয়ার্ডে ছাড়া হয়েছে। সাফাইয়ের কাজও চলছে।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ডেঙ্গি রোধে গাপ্পি অবশ্যই উপকারী। তবে, ইচ্ছেমতো ছাড়লেই হবে না। ডেঙ্গির ভাইরাস বহনকারী এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশা জন্মায় পরিষ্কার জলে। গাপ্পি মাছও পরিষ্কার জলে ছাড়তে হবে। নোংরা জলে গাপ্পি বাঁচে না। দেখতে হবে, জলের তোড়ে মাছ যাতে ভেসে না যায়।। এক স্বাস্থ্যকর্তার বক্তব্য, কেউ ডেঙ্গি সংক্রমিতহলে, তাঁর বাড়ির ১০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে পরিষ্কার নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া হলে ভাল।সেগুলি বেঁচে থাকছে কি না, আশপাশের লোকজনকে খেয়াল রাখতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘ধরা যাক, নর্দমায় রান্নার তেল ঢেলেদিলেন কোনও বাড়ির লোক। সেখানে গাপ্পি থাকলে, তারা মরে যাবে।ফলে, সতর্ক থাকতে হবে।’’ ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা হতে ৭ দিন লাগে।

উত্তরপাড়া পুর-কর্তৃপক্ষ এখানকার মহামায়া হাসপাতাল এবং কঠিন বর্জ্য প্রতিস্থাপন প্রকল্প চত্বরে মোট ১৫টি চৌবাচ্চা তৈরি করেছে গাপ্পি চাষের জন্য। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব জানান, এখন ৬টিতে চাষ হচ্ছে। বাকিগুলিতেও হবে। এক লক্ষের বেশি মাছ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। ফলে, গাপ্পি কিনতে তো হবেই না, এলাকার প্রয়োজন মেটানোর পরেও অনেক উ্দবৃত্ত থাকবে।

অন্য পুরসভা, পঞ্চায়েতকে বিক্রি করা হবে?

দিলীপের বক্তব্য, ‘‘সরকার বা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ থাকলে, আমাদের প্রয়োজন মিটিয়ে অন্যদের নিশ্চয়ই দেব।’’ স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, গাপ্পি চাষের পরিকল্পনা ভাল। প্রয়োজনের সময় সরবরাহে সমস্যা থাকবে না।

তথ্য সহায়তা: সুদীপ দাস

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue Fear Uttarpara

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy