ক্লাস নিচ্ছেন প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। ছবি: সুব্রত জানা
শ্যামপুরের নওদা নয়নচাঁদ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে অভিভাবকদের একাংশের হাতে ইংরেজি শিক্ষকের প্রহৃত হওয়ার ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে তিন দিন। কিন্তু এখনও শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
এ বিষয়ে হাওড়া জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয়কুমার পাল বলেন, ‘‘স্কুলের তরফে আমাদের সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিয়ো দেখে মঙ্গলবার রাতে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে অনেক রাতে তিনি ফোন করলে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্ট বুধবার বিকেল পর্যন্ত আসেনি। এলে খতিয়ে দেখে পরবর্তী প্রক্রিয়া করা হবে।’’
শুধু স্কুল শিক্ষা দফতর নয়, প্রশাসনের তরফ থেকেও বুধবার পর্যন্ত স্কুলে কেউ আসেননি বলে খবর। শ্যামপুর-২ বিডিও ফারজানা খান বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। শীঘ্রই স্কুলে যাওয়া হবে।’’
পুলিশ অবশ্য পদক্ষেপ করেছে। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘কারণ যাই হোক, স্কুলের ভিতরে ঢুকে শিক্ষককে মারধর করা বরদাস্ত করা হবে না।’’ বুধবারও স্কুলে পুলিশ প্রহরা ছিল।
রিপোর্ট পাঠানো প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণাভ বাজানি বলেন, ‘‘ শীঘ্রই রিপোর্ট পাঠানো হবে। আশা করছি, শিক্ষা দফতর ও প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।’’
বুধবার পুলিশ প্রহরার মধ্যেই পঠন-পাঠন চলে। পড়ুয়া ও শিক্ষক ছাড়া এ দিন স্কুলে ঢুকতে গেলে পুলিশ কর্মীদের জবাবদিহি করে যেতে হচ্ছিল। প্রতিদিনের মতো ১০টা ৪০ মিনিটে প্রার্থনা শুরু হয়। শুরুতেই শিক্ষকরা পড়ুয়াদের নানা বিষয় সতর্ক করে দেন। পড়ুয়ারাও তাদের মত জানায়। অভিভাবকদের তরফে অনেকেই স্কুলে আসেন। তাঁরা শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
আজ, বৃহস্পতিবার তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের উদ্যোগে স্কুলের মাঠে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে। সংগঠনের জেলা নেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই প্রতিবাদ সভায় আমরা সব শিক্ষক সংগঠনকে থাকার জন্য বলেছি। শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করা হবে।’’
এই স্কুলে গত সোমবার ইংরেজির শিক্ষক প্রসেনজিৎ বিশ্বাসকে স্টাফরুমে ঢুকে মারধরের অভিযোগ ওঠে চার অভিভাবকের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে ধরা পড়েছে দু’জন। ধৃতদের বক্তব্য, তাঁদের বাড়ির দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে ওই শিক্ষক মারধর করেছিলেন। শিক্ষকের অবশ্য দাবি, ছাত্রটি ক্লাসে গোলমাল করছিল। সে কারণে তাকে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। মারধর করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy