Advertisement
E-Paper

flood: নৌকা নামল হিন্দমোটরে, রাস্তা ডোবায় ভোগান্তি অন্যত্রও

শুক্রবারও জমা জলে ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই পেলেন না হুগলি শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা। হিন্দমোটরে নৌকা চলল। শ্রীরামপুরে পথ অবরোধ হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২১ ০৭:২৫
টিনের নৌকা করে ঘরের জিনিস সরাচ্ছেন এক মহিলা। হিন্দমোটরে।

টিনের নৌকা করে ঘরের জিনিস সরাচ্ছেন এক মহিলা। হিন্দমোটরে। নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টি কমেছে। কিন্তু শুক্রবারও জমা জলে ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই পেলেন না হুগলি শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা। হিন্দমোটরে নৌকা চলল। শ্রীরামপুরে পথ অবরোধ হল। দিকে দিকে পরিস্থিতির জন্য বেহাল নিকাশি ব্যবস্থাকে দুষলেন ভুক্তভোগীরা।

বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার চৌহদ্দিতে রয়েছে হিন্দমোটর কলোনি। এলাকাটি উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। রাস্তা তো বটেই, কলোনির অনেক বাড়িতে হাঁটুর উপরে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানা বন্ধ হওয়ার পর থেকে কলোনির আবাসনের নাগরিক পরিষেবা বেহাল। সুষ্ঠু নিকাশি না থাকায় জল নামছে না। জমা জল ঠেলে পুরসভার গাড়ি না আসায় পানীয় জল মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে জল থেকে বাঁচাতে কেউ কেউ ঘরের জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান। সেই কাজেই এ দিন এখানে টিনের নৌকা ব্যবহার করতে দেখা গেল।

স্থানীয় বাসিন্দা পঙ্কজ রায় এবং প্রভুনাথ যাদবের ক্ষোভ, ‘‘নিকাশি ঠিক থাকলে এই অবস্থা হয়? বৃষ্টি থামলেও জল নামতে চাইছে না। দুর্বিষহ অবস্থা। পুরসভা চোখ বুজে থাকে।’’ প্রভুনাথ বলেন, ‘‘ঘরের জিনিসপত্র বাধ্য হয়ে অন্যত্র সরাতে হচ্ছে। ভ্যান আসতে চাইছে না। বাধ্য হয়ে নৌকা জোগাড় করে আনতে হল।’’

দেশের প্রথম মোটরগাড়ি কারখানা হিন্দুস্থান মোটরস ২০১৪ সাল থেকে বন্ধ। নৌকা চলতে দেখে অনেকে কারখানার সুদিনের স্মৃতিচারণে ডুব দিলেন। তাঁরা জানান, সেই সময় নিকাশি থেকে অন্য পরিষেবা— সবই ভাল মানের ছিল। আর এখন বেহাল নিকাশির কারণে এই চৌহদ্দি জলভাসি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর তথা বিদায়ী কাউন্সিলর, কংগ্রেসের কামাখ্যানারায়ণ সিংহ অবশ্য পরিষেবায় ঘাটতির কথা মানছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রকৃতির রোষে সব কিছুই তো ওলটপালট হয়ে যায়। এত বৃষ্টিতে শুধু এখানে নয়, সর্বত্র জল জমেছে। তাতে স্বাভাবিক কারণেই কিছু অসুবিধা হচ্ছে।’’

উত্তরপাড়া স্টেশন লাগোয়া কাঁঠালবাগান, হিন্দমোটর স্টেশন রোড, শান্তিনগর এলাকা থেকে এ দিনও জল নামেনি। পুর-পুরপ্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘জল বের করতে চার জায়গায় পাম্প চালানো হয়েছে। সার্বিক সুষ্ঠ নিকাশির জন্য কেএমডিএ-র সঙ্গে কথা বলেছি। সেই কাজ দ্রুত শুরুর চেষ্টা চলছে।’’

জল জমার প্রতিবাদে এ দিন সকাল ৯টা থেকে অবরোধ শুরু হয় শ্রীরামপুরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাইল্যান্ড রোডে। অবরোধকারীদের অভিযোগ, নর্দমার নোংরা জল বাড়িতে ঢুকেছে। সুষ্ঠু নিকাশির অভাবে জল নামছে না। আশপাশের পুকুর নির্বিচারে ভরাট হওয়ায় এই পরিস্থিতি। অবরোধ চলে দুপুর ৩টে পর্যন্ত।

চুঁচুড়া রেলপুলের নীচে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে পড়ে। জল এড়াতে অনেকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পেরিয়ে যাতায়াত করেন। চুঁচুড়া পুরসভার ১৬ এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ষষ্ঠীতলা, নজরুল সরণি, ধরমপুরের বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন ছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিধায়ক অসিত মজুমদার পুর-প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই সব জায়গা ঘুরে দেখেন। বিধায়ক বলেন, ‘‘নিকাশি নালা নিয়মিত সংস্কার করা হচ্ছে। আগামী বর্ষার আগে জলযন্ত্রণা পুরোপুরি মেটাতে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগানো হবে।’’

তারকেশ্বর পুরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিতেই কমবেশি জল জমেছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের। পুরসভা সূত্রের দাবি, সমস্যা সমাধানে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কার করা হবে। সমস্যায় পড়া লোকজনকে শুকনো ও রান্না করা খাবার দেওয়া হবে।

টানা বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার রাতে ডানকুনির চাকুন্দিতে একটি মাটির বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। তবে, কেউ হতাহত হননি। ওই রাতে ডানকুনির কালীপুরে একটি নির্মীয়মাণ সেতুর পাশে রাস্তায়
ধস নামে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy