Advertisement
E-Paper

প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে ‘পথের কাঁটা’ স্বামীকে সুপারি দিয়ে খুন! ১৩ বছর পর ছেলের সাক্ষ্যে দোষী মা

২০১২ সালের ২৮ মার্চ পোলবার পাটনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণকে গলা কেটে খুন করা হয়। কৃষ্ণের স্ত্রী পুলিশকে জানান, বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল। তাঁকে এবং তাঁর ছেলের হাত বেঁধে স্বামীকে খুন করে ডাকাতদল।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১৭:১৩
court

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

১৩ বছর আগে নিজের বাড়িতে খুন হয়েছিলেন হুগলির বাসিন্দা কৃষ্ণ মাল। পুলিশে কাছে স্ত্রী অভিযোগ করেন, ঘরে ডাকাত পড়েছিল। তারাই খুন করেছে স্বামীকে। কিন্তু আদালতে প্রমাণিত হল স্বামীকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করিয়েছেন স্ত্রী রীনা মাল। বস্তুত, নাবালক ছেলের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করল চুঁচুড়া আদালত। মঙ্গলবার কৃষ্ণ খুনের ১৩ বছর পরে মৃতের স্ত্রী-সহ সাত জনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন বিচারক।

২০১২ সালের ২৮ মার্চ পোলবার পাটনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণকে গলা কেটে খুন করা হয়। কৃষ্ণের স্ত্রী পুলিশকে জানান, বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল। তাঁকে এবং তাঁর ছেলের হাত বেঁধে স্বামীকে খুন করে ডাকাতদল। তার পর ঘর থেকে গয়না, নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায় তারা। শুধু তা-ই নয়, ডাকাতেরা তাঁকে ধর্ষণ করে বলেও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন তিনি।

কিন্তু খুনের তদন্ত এগোতেই সম্পূর্ণ অন্য ইঙ্গিত পায় পোলবা থানার পুলিশ। জানা যায়, কৃষ্ণের সঙ্গে রীনার বয়সের ফারাক ছিল প্রায় ২০ বছরের। দম্পতির ১২ বছরের এক ছেলে রয়েছে। কিন্তু স্বামীকে নিয়ে সুখী ছিলেন না রীনা। বলাগড়ের বাসিন্দা জিকো পাল নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনের সম্পর্ক ক্রমশ গভীর হয়। দু’জনে একসঙ্গে থাকবেন বলে কৃষ্ণকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ভাড়া করা হয় পাঁচ পেশাদার খুনিকে।

পরিকল্পনা মাফিক ২০১২ সালের ২৮ মার্চ গভীর রাতে কৃষ্ণের বাড়িতে যায় পাঁচ ভাড়াটে খুনি। বাড়ির মূল দরজা খুলে দিয়েছিলেন রীনা। তার পর খুন হন কৃষ্ণ। ওই ঘটনাকে ডাকাতির সময় খুন বলে চালাতে গিয়ে পুলিশের কাছে নিজেকে ধর্ষিত বলেও দাবি করেন মহিলা। পুলিশের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে স্পষ্ট হয়ে যায় এই মামলা। বাবাকে খুনের ঘটনায় সাক্ষী দেয় নাবালক ছেলে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন রীনা, তাঁর প্রেমিক জিকো। দীপঙ্কর পাল, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, লক্ষ্মীকান্ত চক্রবর্তী, অভিজিৎ চক্রবর্তী ও রাজা দাস নামে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতের সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এই মামলায় ১৮ জন সাক্ষী দেন। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মৃতের নাবালক ছেলের বয়ান। ধর্ষণের যে অভিযোগ ছিল, তা মেডিক্যাল পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়নি। আজ (মঙ্গলবার) চুঁচুড়া আদালতের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক কৌস্তভ মুখোপাধ্যায় সাত জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছেন। আগামী ২৬ জুলাই সাজা ঘোষণা হবে।’’

উল্লেখ্য, গত ১৩ বছর ধরে হুগলি জেলা সংশোধনাগারে বন্দি রীনা। খুনের মামলায় অভিযুক্ত চার জন পুলিশের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে পালিয়ে গেলেও পরে ধরা পড়েন। তাঁদের সকলে এখন বিভিন্ন জেলে বন্দি।

Murder Case Testimony Crime Wife kills Husband
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy