ফাইল চিত্র।
প্রতি বছর শহরে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশার লার্ভা ধ্বংসের পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় বাড়ি বা বহুতলগুলিতে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনা। এই সমস্যা মেটাতে এ বার অভিনব সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা। পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বাড়ি বা আবাসনগুলিতে মশার লার্ভা মারতে বা তেল ছড়াতে গিয়ে পুরকর্মীরা বাধা পেলে সংশ্লিষ্ট বাড়ি বা বহুতলটিকেই মশার আস্তানা হিসাবে চিহ্নিত করে পোস্টার সেঁটে দেবে পুরসভা। একই সঙ্গে বিভিন্ন থানা এবং পুলিশ লাইনে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত গাড়িগুলি অবিলম্বে সরানোর ব্যবস্থা করতে পুরসভার তরফে পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বাজেয়াপ্ত হওয়া গাড়িগুলি দীর্ঘকাল ওই অবস্থায় পড়ে থাকায় সেগুলিতে জল জমে সেখানে বংশবৃদ্ধি করছে মশা।
সম্প্রতি পুর ভবনে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুর চেয়ারপার্সন-সহ প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ও পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। হাওড়ার বিভিন্ন আবাসন ও বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ঢুকতে না দেওয়ার অনীহার কথা বার বার উঠে আসে বৈঠকে। তার পরেই ঠিক হয়, যে সব ফ্ল্যাট বা বাড়ির মালিক পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের মশার লার্ভা মারতে অথবা লার্ভিসাইড তেল ছড়াতে দেবেন না, সেই ফ্ল্যাট বা বাড়ির দেওয়ালে ‘ডেঙ্গির আঁতুড়ঘর’ হিসাবে পোস্টার সেঁটে দেওয়া হবে। চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘গত বারের তুলনায় এখনও পর্যন্ত হাওড়া শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ কম। গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০০। এ বার এখনও পর্যন্ত সেই সংখ্যা ২৯। ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩১ এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৩-৪ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই দুই ওয়ার্ডে ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, যে সব ওয়ার্ডে বেশি ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ পাওয়া যাবে, সেখানে নিয়মিত ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করা হবে।
আক্রান্তের সংখ্যা যাতে আর না বাড়ে, সে জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে কী ভাবে ডেঙ্গির মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে সব এলাকায় ডেঙ্গির প্রভাব বেশি, সেখানে প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে মশা মারার তেল ছড়াবেন।
হাওড়ার বিভিন্ন থানায় বা শিবপুর পুলিশ লাইনে পড়ে থাকা অজস্র পরিত্যক্ত গাড়িতে প্রতি বছর জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা মেলে। তাই ঠিক হয়েছে, অবিলম্বে ওই গাড়িগুলি হয় ভেঙে ফেলার জন্য অথবা অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হবে পুলিশ-প্রশাসনকে।
এ ছাড়া যে সব জায়গায় জল জমে, লার্ভা নিধনে সেখানে ছাড়া হবে গাপ্পি মাছ। এ জন্য সাড়ে ১২ লক্ষ গাপ্পি মাছ আনা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy