দু’দিনের ভারী বৃষ্টির জেরে ফের জমা জলে ভাসল হাওড়া পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড। রবিবার ওসোমবার, দু’দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে একাধিক পুজো মণ্ডপ। পুজোর মুখে নিম্নচাপের এ হেন ভ্রুকুটিতে তাই চিন্তায় পড়েছেন হাওড়ার বিভিন্ন ছোট-বড় পুজোর উদ্যোক্তারা। কোথাও মণ্ডপের সামনে জল জমে গিয়েছে। কোথাও মণ্ডপ তৈরির উপকরণ ভিজে যাওয়ায় কাজ মাঝপথে থমকে গিয়েছে। হাওড়া পুরসভা কর্তৃপক্ষের অবশ্যদাবি, পাম্প চালিয়ে অধিকাংশ এলাকা থেকে জমা জল নামানো হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় জল জমেথাকলেও তা নেমে যাবে, যদি বৃষ্টি আর না হয়।
গত দু’দিনের বৃষ্টির জেরে উত্তর হাওড়ার নস্করপাড়া রোড, মধ্য হাওড়ার পঞ্চাননতলা রোড, সানপুর, বেলগাছিয়া, শিবপুর রোডের একাংশে জল জমেগিয়েছে। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন পঞ্চাননতলা রোডের বড় বাজেটের পুজোগুলির উদ্যোক্তারা। তাঁদের অভিযোগ,কেএমডিএ এমন ভাবে রাস্তার কাজ করেছে যে, রাস্তা উঁচু হয়ে গিয়েছে। ফলে, অপেক্ষাকৃত নিচু গলিগুলিতে বৃষ্টির জল জমে গিয়েছে। দেড় কিলোমিটার লম্বাপঞ্চাননতলা রোডের ধারের আমতলা গলি, ঝাউতলা গলি, পাগলা ফৌজ ক্লাবের গলি, জাতীয় সেবাদলের মাঠ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।ব্যাহত হচ্ছে মণ্ডপ তৈরি ও সাজানোর কাজ।
হাওড়ার অন্যতম পুরনো পুজো, পঞ্চাননতলা রোড সংলগ্ন জাতীয় সেবাদলের সহ-সভাপতি সুবীর রায় বললেন, ‘‘বছরের পরবছর ঠিক মতো নর্দমা পরিষ্কার করে না পুরসভা। ভাঙাচোরা রাস্তায় হাঁটাচলা করাই দায়। তার মধ্যে কেএমডিএ রাস্তা উঁচু করে দেওয়ায় গোটা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।মণ্ডপের মাঠ জলে ভাসছে।’’ টানা বৃষ্টিতে জল জমে যাওয়ায় চিন্তিত উত্তর হাওড়ার সালকিয়া ব্যায়াম সমিতির পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা পুলককুমার শিকদার। তিনি বললেন, ‘‘আমরা খুবই চিন্তায় আছি। একেবারে শেষ মুহূর্তে যে ভাবে ঘন ঘন নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে, তাতে পুজোরসময়ে কী হবে, জানি না। গোটা মণ্ডপ প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে কোনও মতে কাজ হচ্ছে।’’
পুজোর উদ্যোক্তারা যখন জমা জল নিয়ে উদ্বিগ্ন, তখন পুরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে,দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে জমা জল অধিকাংশ এলাকা থেকেই নেমে গিয়েছে। কারণ, এই দু’দিন পুরসভার প্রতিটি পাম্প হাউসসচল রাখা হয়েছিল। সেই কারণে এমন কিছু এলাকা, যেখানে সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমত, সেখানেও জল জমেনি বা জমলেও দ্রুত নেমে গিয়েছে। পুরকর্তাদের দাবি, উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা, শৈলেন মান্না সরণি, টিকিয়াপাড়া কিংবাবেলিলিয়াস রোডের মতো এলাকায় যেখানে বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়, সেখানেও দু’দিনের ভারী বৃষ্টিতে সে ভাবে জল জমেনি। জমলেও দ্রুত নেমে গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সম্প্রতি ডবল ব্যারেলও নিকাশি নালাগুলি পরিষ্কার করায় এবং নতুন পাম্প হাউস তৈরি হওয়ায় শহরের এমন অনেক এলাকায় জল জমেনি, যেখানে আগে জমত। কোথাও কোথাও জমলেও দ্রুত নেমে গিয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)