E-Paper

ধরপাকড়ে ঢিলেমি, তাতেই কি শব্দ-তাণ্ডব মাত্রাছাড়া হাওড়ায়?

গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বার শব্দবাজির দাপট যে বেশি দেখা যাবে, তা বোঝা গিয়েছিল অবৈধ বাজি উদ্ধারে আগের তুলনায় পুলিশি অভিযান‌ কম হওয়ায়।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:২৫

—প্রতীকী চিত্র।

আশঙ্কা ছিলই। শুধু অপেক্ষা ছিল দিনটির। সেই মতো কালীপুজোর সন্ধ্যা হতেই দেখা গেল, শব্দবাজির কান ফাটানো আওয়াজ আর ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে হাওড়া শহর। অভিযোগ, শব্দের দাপটে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও পুলিশের ভূমিকা ছিল কার্যত নীরব দর্শকের। গত কয়েক বছরে প্রশাসনের তৎপরতায় শব্দবাজিতে কিছুটা হলেও লাগাম পরানো গিয়েছিল। যদিও এ বছর ছবিটা পুরোপুরি উল্টে গিয়েছে। শব্দবাজির দাপট ফিরে এসেছে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়ে।

গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বার শব্দবাজির দাপট যে বেশি দেখা যাবে, তা বোঝা গিয়েছিল অবৈধ বাজি উদ্ধারে আগের তুলনায় পুলিশি অভিযান‌ কম হওয়ায়। আর সেই সুযোগে হাওড়া শহর ও শহরতলি জুড়ে অবাধে তৈরি এবং বিক্রি হয়েছে বেআইনি শব্দবাজি। যার জেরে বাঁকড়া, জাপানি গেট, দাশনগর, কদমতলা, চ্যাটার্জিপাড়া, হাওড়া ময়দান, সালকিয়া, শিবপুর, এমনকি নবান্ন চত্বরেও রাত বাড়তেই অবাধে শুরু হয়ে যেত শব্দবাজির উৎপাত। অভিযোগ, শব্দবাজির উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা ফোন করলেও পুলিশের দেখা মেলেনি।

এ বছর কালীপুজোর অনেক আগে থেকেই হাওড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে বা গোপনে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হয়েছে বলে খবর। অভিযোগ, এ বছর পুলিশি তৎপরতা যথেষ্ট না থাকায় শব্দবাজি চোরাপথে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়ার গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে শহরে এসে পৌঁছেছে। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, এ বছর শব্দবাজি উদ্ধারে পুলিশি তৎপরতা কম ছিল কেন? হাওড়া সিটি পুলিশের যুগ্ম নগরপাল কে সাবেরী রাজকুমার সোমবার বলেন, ‘‘শব্দবাজিতে নজরদারির থেকেও শব্দবাজি নিয়ে সচেতনতার উপরে এ বার বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষত, শহরের আবাসনগুলিতে গিয়ে বিভিন্ন থানার আধিকারিকেরা সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়েছেন। সচেতনতার প্রচার ও নজরদারি সত্ত্বেও কেউ নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটালে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ যুগ্ম নগরপাল জানান, আগামী কয়েক দিন শব্দবাজির উপরে নজরদারি চালানো হবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, কালীপুজো ও দীপাবলি উপলক্ষে শব্দবাজির উপরে নজরদারি চালাতে হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে অতিরিক্ত আড়াই হাজার পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছে। রবিবার রাত থেকেই কোথায় কোথায় শব্দবাজি ফাটছে, সে দিকে নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ। সেই সঙ্গে কালী প্রতিমা ভাসানের সময়ে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্যও হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া, ৫০০ জন পদস্থ আধিকারিকের নেতৃত্বে মোতায়েন করা হয়েছে র‍্যাফ। বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশের টহলদারি চলছে বলেও জানানো হয়েছে। ড্রোন উড়িয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কালীপুজোর রাতে শব্দদানবকে কেন বন্দি করা গেল না, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে গোলাবাড়ি থানার উল্টো দিকে এক আবাসনে শব্দবাজি ফাটানো হচ্ছিল। ওই আবাসনে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তির পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল। পুলিশ ওই আবাসনে ঢুকে যাঁরা শব্দবাজি ফাটাচ্ছিলেন, তাঁদের নিষেধ করে তা বন্ধ করে দেয়। এর পরে সোমবার দুপুরে আবাসনের ছাদে বাজি ফাটানোর দাবিতে বাসিন্দারা গোলাবাড়ি থান‌া ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Fire Crackers Crackers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy