E-Paper

ডিভিসি জল ছাড়া কমালেও খানাকুল আবারও জলমগ্ন

রূপনারায়ণ নদের জল আরও অন্তত ফুট দুয়েক না নামা পর্যন্ত এলাকার জল নিকাশির ক্ষেত্রে এই অসুবিধা থাকবে বলে দুই ব্লক বিপর্যয় দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৩
খাবার নিয়ে জল পেরিয়ে বাড়ির পথে। মঙ্গলবার জাঙ্গিপাড়ায়।

খাবার নিয়ে জল পেরিয়ে বাড়ির পথে। মঙ্গলবার জাঙ্গিপাড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর দে

ডিভিসি-র ছাড়া জলে এ বারও বানভাসি অবস্থা থেকে রেহাই পেলেন না খানাকুলের দু’টি ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ। ডিভিসি জল ছাড়া কমানোয় খানাকুল বাদে বন্যাপ্রবণ আরামবাগ মহকুমার বাকি অংশের অবশ্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর এবং রূপনারায়ণের জলস্তর বিপদসীমার নীচে চলে গিয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন সেচ দফতরের(নিম্ন দামোদর) জেলা এগ্‌জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবেন্দ্র কুমার সিংহ।

মহকুমার অন্যত্র থেকে নামা জল বিভিন্ন খাল বেয়ে খানাকুলের দু’টি ব্লক এলাকার বিভিন্ন জায়গাকে নতুন করে ডুবিয়েছে। প্রসঙ্গত, ওই দুই ব্লকই ভৌগোলিক ভাবে সবচেয়ে নিচু। প্রতি বর্ষায় ডিভিসি জল ছাড়লে ডোবে। খানাকুল ১ ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি (পোল ১ ও ২, অরুন্ডা, রামমোহন ১, খানাকুল ১ ও ২ এবং ঠাকুরানিচক) নতুন করে জলমগ্ন হয়েছে। খানাকুল ২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের সব ক’টিই ডুবেছে। জগৎপুর, ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা ইত্যাদি পঞ্চায়েত এলাকার বহু জায়গায় এ দিন প্রায় তিন ফুট জল দাঁড়িয়ে। জগৎপুরের জগদীশতলায় বাস চলাচল সকাল থেকে বন্ধ। রূপনারায়ণ নদের জল আরও অন্তত ফুট দুয়েক না নামা পর্যন্ত এলাকার জল নিকাশির ক্ষেত্রে এই অসুবিধা থাকবে বলে দুই ব্লক বিপর্যয় দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

খানাকুল ১ ব্লকে ৪টি এবং খানাকুল ২ ব্লকে ৩টি ত্রাণ শিবির চলছে। পানীয় জলের টিউবওয়েল জলমগ্ন হতে পারে আশঙ্কা করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে দু’টি ব্লকের জন্য ৩৫ হাজার জলের পাউচ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহকুমা জনস্বাস্থ্য কারিগরি আধিকারিক সৌরভ বিশ্বাস।

ত্রাণ নিয়ে দুই ব্লকেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ আছে। এ দিন খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ ত্রাণের দাবিতে খানাকুল নম্বর ব্লকে বিক্ষোভ দেখান। বিধায়কের অভিযোগ, “ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে এসে জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও, এমনকি, মন্ত্রী বেচারাম মান্না পর্যন্ত পর্যাপ্ত ত্রাণের কথা বলছেন। অথচ, পঞ্চায়েতগুলিতে ত্রাণ পৌঁছয়নি।”

ব্লক প্রশাসন থেকে ত্রাণ পাঠানো শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ত্রাণ বলতে মূলত ত্রিপলের দাবিই বেশি। পোল ২ পঞ্চায়েত এলাকা পাতুল দক্ষিণপাড়ার নারায়ণ মালিক, শান্ত পরামানিক, প্রতিমা মালিক প্রমুখের অভিযোগ, ঘরে জল ঢুকেছ। উঁচু জায়গায় থাকার জন্য পঞ্চায়েত এবং ব্লকে ত্রিপলের দরবার করে মেলেনি। নিজেরা ত্রিপল কিনে ছাউনি করে থাকতে হচ্ছে।’’

অন্যদিকে, জাঙ্গিপাড়ার রসিদপুর, রাজবলহাট এবং তারকেশ্বরে তালপুর, কেশবচক ও চাঁপাডাঙা পঞ্চায়েতে দামোদরের পারের কয়েকটি গ্রামেও সোমবার রাত থেকে নতুন করে জল ঢুকতে থাকে। জাঙ্গিপাড়ায় দু’টি ফ্লাড শেল্টার খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার চাঁপাডাঙায় পরিস্থিতি দেখতে আসেন হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য, গ্রামীণ পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন এবং মন্ত্রী বেচারাম মান্না।

বেচারাম বলেন, ‘‘অপরিকল্পিত ভাবে জল ছাড়ার ফলে এই পরিস্থিতি হয়েছে। মানুষের কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’’ জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তমালশোভন চন্দ জানান, ডিভিসি-র জল ছাড়ার কারণে এখানকার ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হতে পারে। কয়েকশো বাড়িতে জল ঢুকেছে। বেশ কিছু মানুষ ফ্লাড সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Khanakul dvc

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy