জনসভায় বক্তব্য পেশ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
সামনে বিধানসভা ভোট। সোমবার পুরশুড়ার সেকেন্দারপুরে জনসভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলিতে নানা উন্নয়নের আশ্বাস দিলেন। যার বেশিরভাগটা আরামবাগ-কেন্দ্রিক।
ভিড়ে ঠাসা দলীয় সভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালের পরিকাঠামো বাড়ানোর কথা। তিনি বলেন, ‘‘খানাকুলে হাসপাতাল ভাল করা দীর্ঘদিনের দাবি। বলে যাচ্ছি, এই হাসপাতাল ৬০ থেকে ১০০ শয্যার করে দেব।’’
মমতা জানান, খানাকুলের রামমোহন কলেজে কর্মী নিয়োগ এবং একটি বয়েজ হস্টেল তৈরির বিষয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছেন। ওই কাজও করা হবে। মৃত এক চটকলকর্মীর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
খানাকুল, পুরশুড়া ফি বছর বন্যার কবলে পড়ে। সেই কথা উল্লেখ করে মমতা জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণে ২৩০০ কোটি টাকার উপরে ‘নিম্ন দামোদর বেসিন’ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে সেচ-ব্রিজ হবে, বাঁধ সারানো হবে, নতুন করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দু’তিন বছরের মধ্যে এই কাজ হবে। আগামী দিনে পুরশুড়া-খানাকুলে বন্যা হবে না বলে তাঁর দাবি। কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা ঘুরেফিরে আসে মমতার মুখে। তাঁর বক্তব্য, মানুষ তাঁকে দুঃসময়ে পাবেন। তিনি জনগণের পাহারাদার।
মমতার দাবি, তৃণমূল পরিচালিত সরকারের দশ বছর হয়নি। তার মধ্যে এক বছর কোভিডের জন্য সে ভাবে কাজ করা যায়নি। ভোটের জন্যও অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে বছর আটেক কাজ করার সুযোগ মিলেছে। তার মধ্যেই উন্নয়নের বহু কাজ করেছেন।
মমতা অভিযোগ করেন, হুগলিতে জুটমিলকে কেন্দ্র করে বিজেপি অশান্তির চেষ্টা করছে। জুটমিলের সঙ্গে যুক্ত লোকজনকে আশ্বস্ত করে হিন্দিতে মমতা জানান, তৃণমূল তাঁদের পাশে থাকবে। তাঁদের যা প্রয়োজন, তৃণমূল দেখবে। কিন্তু তাঁরা যেন বিজেপির উপরে ভরসা না করেন।
বিজেপিকে জব্দ করতে ‘হাতা-খুন্তির দাওয়াই’ শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। বলেন, ‘‘মা-বোনেরা রান্না করেন। হাতা-খুন্তি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেও জানেন। বিজেপি যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে, টুকটাক বোম-অস্ত্র নিয়ে বেরোয়, বাইক নিয়ে লালচুল কানে দুল নিয়ে বেরোয়, হাতা-খুন্তি নিয়ে ভাল করে রান্না করে দেবেন তো? ভাল করে দেবেন তো?’’ মমতার কথায়, তিনি মাথা নিচু করলে জনগণের সামনে করবেন। বিজেপির সামনে নয়।
পুরশুড়ার তাঁতিশাল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভগ্নদশার কথা মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে আনতে চেয়েছিলেন কিছু গ্রামবাসী। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাতে বাধা দেন। তাঁদের দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উন্নতির দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু মমতার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেননি তাঁরা।
অরুন্ডা গ্রামের শেখ মনসুর, বালিপুরের বিমল মালিক, মদনপুর গ্রামের সঞ্জয় বক্সী, তাঁতিশাল গ্রামের ভূদেব পালদের দাবি, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপর নির্ভরশীল প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ। সিএমওএইচ শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ স্থানীয় তৃণমূল শেখ সাকিমের দাবি, ‘‘কেউ বাধা দেয়নি। গ্রামবাসীরাই জানিয়েছেন, বিষয়টি জেলা পরিষদে জানাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy