নাতি এবং মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে জামাইয়ের হাতে আক্রান্ত হলেন শ্বাশুড়িও। —প্রতীকী চিত্র।
স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহে নিজের দুই দুধের শিশুকেই ছুরি দিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে। দুই নাতি এবং মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে জামাইয়ের হাতে আক্রান্ত হলেন শ্বাশুড়িও। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির মগরায়। গ্রেফতার হয়েছেন অভিযুক্ত। হুগলির মগরা থানার বাঁশবেড়িয়া সাহেববাগান এলাকার এই ঘটনায় জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সন্দীপ পাশি পেশায় দিনমজুর। কিছু দিন ভিন্রাজ্যে কাজ করতেন। এখন বাঁশবেড়িয়া এলাকাতেই কাজ করেন। শুক্রবার বিকেলে কাজ থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। তবে মত্ত অবস্থায়। বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন প্রতিবেশী এবং দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় কমল তাঁর বাড়িতে রয়েছেন। সন্দীপের দাবি, স্ত্রী জ্যোতির সঙ্গে প্রতিবেশীকে তিনি ‘ঘনিষ্ঠ অবস্থায়’ দেখেছেন। এর পরই ছুরি নিয়ে মারতে যান।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে সন্দীপের ছুরির আঘাতে তাঁর স্ত্রী আহত হন। সেই সময় কমলের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় সন্দীপের। সন্দীপকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনই নিজের ৪ এবং দেড় বছরের দুই ছেলের গলায় ছুরি চালিয়ে দেন অভিযুক্ত। কাছেই সন্দীপের শ্বশুরবাড়ি। মেয়ের কাছে খবর পেয়ে শ্বশুর-শাশুড়ি চলে এসেছিলেন জামাইয়ের বাড়িতে। জামাইকে নিরস্ত্র করতে গিয়ে শ্বাশুড়িও ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত হন।
পরে বাঁশবেরিয়া মিল ফাঁড়ির পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। সন্দীপের স্ত্রী, শাশুড়ি এবং দুই সন্তানকে ভর্তি করানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে। দুই শিশুর গলায় গভীর ক্ষত হয়েছ। তাদের অস্ত্রোপচার করতে হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
জ্যোতির দাবি, স্বামী নিছক সন্দেহের বশে তাঁর উপর অত্যাচার করেন। ২ সন্তানকেও খুনের চেষ্টা করেন। জ্যোতির বাবা তারক রাজভর বলেন, ‘‘নিজেরা দেখে বিয়ে করেছিল বছর পাঁচেক আগে। তার পর থেকে পণের জন্য মেয়েকে নানা ভাবে অত্যাচার করতে থাকে জামাই। মেয়ে ভাল। ওর সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই। আমার একটা ছোটো দোকান আছে। আমি বলেছি, দোকানটা দিয়ে দেব। কিন্তু মদ খেয়ে এসে এই কাণ্ড ঘটাল জামাই।’’ তিনি জানান মেয়েকে আর শ্বশুরবাড়িতে রাখবেন না।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মগরা থানার পুলিশ। এ নিয়ে হুগলি গ্রামীণের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে সন্দীপের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ হয়েছিল। পরে দু’জন সম্মতিক্রমে এক সঙ্গে থাকছিলেন। আর তার পর এই ছুরি দিয়ে মারার ঘটনা। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy