বেপরোয়া: সংক্রমণ বাড়ায় আতঙ্কিত মানুষ কম আসছেন মঙ্গলাহাটে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
করোনা-আতঙ্কে এ বার ভিড় কমল হাওড়ার মঙ্গলাহাটে। হাটের চেনা ছবিটা অনেকটাই পাল্টে গেল মঙ্গলবার। যদিও একাধিক বার প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা সত্ত্বেও, এমনকি করোনা-বিধি মেনে চলার জন্য এ দিন মাইকে হাটমালিকদের তরফে প্রচার করা হলেও ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বেশির ভাগের মুখেই ছিল না মাস্ক। মানা হয়নি
দূরত্ব-বিধিও। এ জন্য সাত জনকে মহামারি আইনে গ্রেফতার করে হাওড়া থানার পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত বছর লকডাউন শুরু হওয়ার আগে এশিয়ার বৃহত্তম এই পাইকারি হাট বন্ধ করে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। গত সেপ্টেম্বর মাসেই ফের চালু হয়েছিল হাট। চলতি বছরে করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে হাটের ব্যবসায়ীদের করোনা-বিধি মেনে চলার জন্য মাইকে প্রচার শুরু করা হয়। মাস্কও বিলি করা হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয় পুলিশি ধরপাকড়। কিন্তু তার পরেও এ দিন দেখা গিয়েছে, হাটে আসা মানুষজন বিনা মাস্কে কেনাকাটা সারছেন। নেই হাট জীবাণুমুক্ত করার কোনও ব্যবস্থাও।
যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, সংক্রমণের ভয়ে এমনিতেই অনেকে হাটে আসছেন না। যাঁরা আসছেন, তাঁদের করোনা বিধি মেনে চলার জন্য মাইকে প্রচার করা হয়েছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় মার খেয়েছে ব্যবসা। হাওড়া হাট সমন্বয় কমিটির সম্পাদক শম্ভু ঘোষ বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য ও জেলা থেকে ক্রেতারা ভয়ে আসছেন না। ফলে ব্যবসা মার খাচ্ছে।’’ মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সম্পাদক কানাই পোদ্দারের দাবি, ‘‘হাটকে সংক্রমণমুক্ত করতে রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে। চলছে মাইকে লাগাতার প্রচার। আমরা চাই না, ফের এই হাট বন্ধ হয়ে যাক।’’
প্রসঙ্গত, হাওড়া ময়দান চত্বরে যেখানে মঙ্গলাহাট বসে, সেই এলাকায় রয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতাল, জেলা আদালত, জেলাশাসকের দফতর, হাওড়া পুরসভার মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস। প্রতি সপ্তাহের সোম এবং মঙ্গলবার বসা এই হাটে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। বহু মানুষ হাটে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ফলত, মঙ্গলাহাট থেকে যে আরও বেশি মাত্রায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে, তা মানছে হাওড়া জেলা প্রশাসনও। তাই করোনা-বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলার জন্য টানা প্রচার করা হচ্ছে।
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘এত বড় হাট আচমকা বন্ধ করা যায় না। তাই হাট চালু রেখে কোভিড-বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলার উপরেই আমরা জোর দিচ্ছি। যে হারে কোভিড সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে নিজেদের এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবেই মানুষ এই হাটে আসছেন না। সেখানে আমাদের কিছু করণীয় নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy