উত্তরপাড়ার প্রতিটি বাড়িতে ২৪ ঘণ্টাই জল সরবরাহ করতে চলছে পুরসভা। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে এখানকার ১৯টি ওয়ার্ডে ওই পরিষেবা মিলবে। অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাকি পাঁচটি ওয়ার্ডেও চালু হবে।
পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের দাবি, নিরবচ্ছিন্ন জল পরিষেবা রাজ্যের মধ্যে উত্তরপাড়াতেই প্রথম চালু হচ্ছে। প্রতিটি আবাসনের বাসিন্দারাও একই সুবিধা পাবেন।
একই সঙ্গে পুরপ্রধানের বার্তা, জল অপচয় যাতে না হয়, সে দিকে মানুষকে নজর রাখতে হবে। পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জল অপচয় বন্ধ করতে সাধারণ মানুষের সার্বিক সচেতনতাও জরুরি। রাস্তার ধারে পুরসভার কল বহু সময় খোলা থাকে। এটা বন্ধ করতে না পারলে পানীয় জলের জলসত্র বেশি সংখ্যায় তৈরি করে পথের ধারেরকল পুরোপুরি তুলে দেওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই।’’
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের ১৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই শহরের কোতরংয়ে গঙ্গার জল শোধন করে সরবরাহের প্রকল্প গড়েছে কেএমডিএ। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি রাজ্যের বৃহত্তম জলপ্রকল্প। উত্তরপাড়ার পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল ডানকুনি-সহ ৭টি পুরসভা এবং ৬টি পঞ্চায়েতে জলের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যেই ওই প্রকল্প।
উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান বলেন, ‘‘পরিবেশবিদদের পরামর্শ অনুযায়ীমাটির নীচের জলস্তর ধরে রাখতে আগামী দিনে গঙ্গার জলকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পানীয় হিসেবে ব্যবহার করতেই হবে। সেই লক্ষ্য পূরণেই আমাদের প্রকল্প।’’ নিখরচায় অবিচ্ছিন্ন জল পরিষেবা নিয়ে খুশি উত্তরপাড়াবাসী।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা জানান, মানুষকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ জল পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি জলের অপচয় বন্ধ করা তাঁদের লক্ষ্য। সে দিকে সমস্ত জায়গায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পুরসভাগুলি আপাতত বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ করবে কোনও অর্থ ছাড়াই। তবে, প্রতিটি বাড়িতে বসানো মিটার নিয়মিত দেখা (রিডিং) হবে, যাতে অতিরিক্ত জল খরচ হলে সতর্ক করা যায়। শহরে বা গ্রামীণ এলাকায় শপিং মল, হোটেল বা পুরসভার ভাড়া দেওয়া ভবন অথবা ব্যক্তিমালিকানাধীন অনুষ্ঠান বাড়ি ইত্যাদি বাণিজ্যিকক্ষেত্রে জল সরবরাহের জন্য লিটারপিছু ১০ পয়সা হারে বিল দিতে হবে পুরসভা বা পঞ্চায়েতে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)