আরও এক বার কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়া পাহাড়ে চড়বেন পিয়ালি, লক্ষ্য জোড়া শৃঙ্গ জয় বেরোচ্ছেন এভারেস্ট জয়ী পিয়ালি বসাক। কৃত্তিম অক্সিজেন ছাড়াই এই অভিযান শেষ করতে চান তিনি। এর আগে ২০২২ সালের ২২ মে এভারেস্ট জয় করেন চন্দননগরের এই পর্বতারোহী। দু’বছর আগে মাকালু ও অন্নপূর্ণা জয়ের পর এ বার লক্ষ্য চো ইউ ও শিশাপাংমা। চৌ ইউ-এর উচ্চতা ৮২৩০ মিটার এবং শিশাপাংমার উচ্চতা ৮০১৬ মিটার।
আগামী ৭ এপ্রিল অভিযানে বেরোবেন পিয়ালি। দু’মাস সময় লাগবে শেষ করতে। পরিবেশ ও বিশ্ব শান্তির বার্তা নিয়ে এ বারের অভিযান তাঁর। এর আগে পিয়ালি আট হাজার মিটার উচ্চতার মানাসুলু, ধৌলাগিরি, লোৎসে, অন্নপূর্ণা, মাকালু এবং এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন। এ ছাড়া আরও সাতটি শৃঙ্গ জয় করেছেন যেগুলি আট হাজার মিটারের কম। এখনও পর্যন্ত ১৫ বার অভিযান করেছেন। যদিও চৌ ইউ পর্বতের দক্ষিন দিক থেকে এক বার অভিযানের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তুষার ঝড়ের জন্য তা সফল হয়নি। এ বার চিন থেকে পর্বতের উত্তর দিকে অভিযান করার লক্ষ্যে আছেন তিনি।
এত দিন পর্বতচূড়ার খরচ মূলত ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ করে তুলতে হয়েছে পিয়ালিকে। এ বারই প্রথম ‘কর্পোরেট স্পনসর’ নিয়ে যাচ্ছেন।
‘এনডোর্সমেন্ট’ হিসাবে বেসরকারি ব্যাঙ্ক ২০ লক্ষ টাকা স্পনসর করেছে। দুটো শৃঙ্গে উঠতে চল্লিশ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। তার জন্য ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ চলছে। অনেক সংগঠন এবং সাধারন মানুষ এগিয়ে এসেছেন পিয়ালিকে সাহায্য করতে।
পিয়ালির মা স্বপ্না বসাক এবং বাবা তপন বসাক দু’জনেই প্রয়াত হয়েছেন গত এক বছরের মধ্যে। তাঁরা সব সময় পিয়ালিকে উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁকে হাত ধরে পাহাড়ে নিয়ে যেতেন তাঁরা। মা বাবার অনুপস্থিতি ফাঁকা লাগছে বলে জানান পিয়ালী। তাঁদের জন্যই আবার পর্বতারোহনে বার হবেন তিনি।
পিয়ালি ইতিমধ্যে ‘পাহাড়ি কন্যা’ নামে পরিচিত। তাঁর চেষ্টা, অদম্য জেদ সবার কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। শেষ বার অভিযানে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাসখানেক নেপালের কাঠমান্ডুর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন পিয়ালি। এ বারের অভিযান যথেষ্ট কঠিন। তবে ভয় পান না পিয়ালি। পাহাড়ের চূড়ায় তার অনায়াস বিচরণ।
পিয়ালি বলেন, “খুব ছোটবেলা থেকে পাহাড়ে চড়েছি। পাঁচ বছর বয়সে দৌড়াদৌড়ি করতাম পাহাড়ে। আমার অক্সিজেনের সাপোর্ট কম লাগে। এভারেস্ট অল্পের জন্য হয়নি। এ বার অক্সিজেন ছাড়াই অভিযান শেষ করার চেষ্টা করব।”