(বাঁ দিকে) ছেলে খুনে ধৃত শান্তা শর্মা এবং মৃত শ্রেয়াংশু শর্মার বাবা পঙ্কজ শর্মা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
হুগলির কোন্নগরে শিশুহত্যায় গ্রেফতার মা এবং তাঁর বান্ধবীর হয়ে সওয়াল করতে রাজি হলেন না কোনও আইনজীবী। বুধবার দুপুরে কোন্নগরকাণ্ডে ধৃত শান্তা শর্মা এবং ইফফাত পারভিনকে তোলা হয় শ্রীরামপুর আদালতে। তদন্তের স্বার্থে দুই মহিলাকে নিজেদের হেফাজতে চায় পুলিশ। বেশ কিছু ক্ষণ সওয়াল-জবাবের পর দু’জনকেই নয় দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। অন্য দিকে, আদালত থেকে বেরিয়ে খুন হওয়া শ্রেয়াংশু শর্মার বাবা পঙ্কজ জানান, অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা চান তিনি। কিন্তু অভিযুক্ত তো আপনার স্ত্রী? কাঁদতে কাঁদতে পুত্রহারা বাবার জবাব, ‘‘খুন যে-ই করুক, আমি চাই সর্বোচ্চ সাজা। ফাঁসি। কারণ, ১৩-১৪ বছর কারাদণ্ড হলেও আবার এক দিন বাইরে আসবে এই অপরাধীরা। এরা সমাজের জন্য ক্ষতিকর।”
কোন্নগরের আদর্শনগরে আট বছরের শিশু খুনের ঘটনার পরতে পরতে রয়েছে রহস্য। তদন্তকারীদের দাবি, সম্পর্কের টানাপড়েনের ‘শাস্তি’ পেতে হয়েছে এক শিশুকে। উঠে এসেছে শান্তা এবং তাঁর বান্ধবীর মধ্যে সমকামিতার সম্পর্কের সমীকরণের ইঙ্গিত। তবে ঠিক কী কারণে আট বছরের শিশুকে তাঁরা মেরে ফেলতে পারেন, তা নিয়ে এখনও তদন্ত বাকি বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক।
১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় স্কুলছাত্র শ্রেয়াংশু যখন খুন হয়, দাবি করা হয় বাড়িতে শিশুটির বাবা-মা কেউ ছিলেন না। আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরেছিলেন শিশুর বাবা পঙ্কজ। তত ক্ষণে হাসপাতালের তরফে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পঙ্কজ প্রথমে দাবি করেন কেউ তাঁর ছেলেকে খুন করে পালিয়েছেন।
তিনি জানান, ঘরের সিঁড়ির পাশে পড়ে থাকা থান ইট, টেবিলে থাকা গণেশমূর্তি দিয়ে আঘাত করা হয়। রান্নাঘরে পড়ে থাকা সব্জি কাটার ছুরি দিয়ে ছেলের শরীর ক্ষতবিক্ষত করেন খুনিরা। কিন্তু তদন্তে নেমে পঙ্কজের স্ত্রীকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিশু খুনে গ্রেফতার হওয়া সেই শান্তা অবশ্য দাবি করেছেন নিজের ছেলেকে কেউ মারতে পারেন না। ধৃত বান্ধবীকে নিয়েও কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ঠিক কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে একমাত্র পুত্রকে খুনের সিদ্ধান্ত নিলেন শান্তা, কী ভাবে জড়িত তাঁর বান্ধবী, এ নিয়ে জেরা করবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy