পর্নকাণ্ড এবং হাওড়ায় সোদপুরের তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত মা-ছেলের মধ্যে ছেলের খোঁজ পেল পুলিশ। পাঁচ দিন খোঁজাখুঁজির পরে কলকাতার গল্ফ গ্রিন এলাকা থেকে শ্বেতা খানের পুত্র আরিয়ানকে গ্রেফতার করেছে তারা। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তকে ডোমজুড় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পৃথক অভিযানে আটক করা হয়েছে শ্বেতার মাকে। তা ছাড়াও পলাতক মহিলার বছর তেরোর কন্যাসন্তানকেও কলকাতায় এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এখন চলছে শ্বেতার খোঁজ।
শ্বেতাদের বাঁকড়ার ফকিরপাড়ার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাতে আদালতের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। ওই ফ্ল্যাটেই উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের তরুণীকে আটকে রেখে শারীরিক অত্যাচার ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, তাঁকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে মাস ছয়েক আগে ডেকেছিলেন আরিয়ানই। সমাজমাধ্যমে আলাপ হয়েছিল তাঁদের। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চাকরি দেবেন বলে তাঁদের মেয়েকে জোর করে পানশালায় কাজ করিয়েছিলেন আরিয়ান এবং তাঁর মা শ্বেতা। পরে পর্ন ভিডিয়োয় অভিনয় করানোর চাপ দেওয়া হত। রাজি না-হওয়ায় তরুণীকে অকথ্য অত্যাচার করেছেন মা-ছেলে। বাঁকড়ার ফ্ল্যাটে আটকে রেখে দিনের পর দিন তাঁকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয় বলেও অভিযোগ।
গত শুক্রবার লুকিয়ে ওই ফ্ল্যাট থেকে কোনও ভাবে পালিয়ে বাড়ি ফেরেন তরুণী। তার পর থেকে তিনি চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সাগর দত্ত হাসপাতালের আইসিসিইউ-তে রাখা হয়েছে তাঁকে। পরিবার সূত্রে খবর, তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এর মধ্যে অভিযুক্ত শ্বেতা এবং পুত্র আরিয়ানের নানা কীর্তি সামনে এসেছে। বাঁকড়ায় শ্বেতার প্রতিবেশীরা তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন। প্রোডাকশন হাউস খুলে পর্ন ভিডিয়োর ব্যবসা করার অভিযোগ মা-ছেলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কাজ দেওয়ার নাম করে তরুণীদের নিয়ে গিয়ে দেহব্যবসা করানোর।
‘নির্যাতিতা’র পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকে মা-ছেলে বেপাত্তা হয়ে যান। তাঁদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। জানা যাচ্ছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গল্ফ গ্রিন এলাকা থেকে শ্বেতার ছেলেকে পাকড়াও করে পুলিশ। আর এক মূল অভিযুক্ত শ্বেতার খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে।
হাওড়ায় তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপ করে জাতীয় মহিলা কমিশন। তারা মঙ্গলবার রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমারকে একটি চিঠি পাঠায়। তাতে বলা হয়েছে, তিন দিনের মধ্যে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ জমা দিতে হবে কমিশনকে। তা ছাড়া ‘নির্যাতিতা’র শারীরিক এবং মানসিক চিকিৎসার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করতে বলা হয়।