সোদপুরের তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে চিঠি দিল জাতীয় মহিলা কমিশন। মঙ্গলবার পাঠানো ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, তিন দিনের মধ্যে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ জমা দিতে হবে। বস্তুত, পর্নকাণ্ডে অভিযুক্ত মা-ছেলের এখনও খোঁজ মেলেনি। অন্য দিকে, নির্যাতিতার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে সাগর দত্ত হাসপাতালের আইসিসিইউ-তে স্থানান্তর করানো হয় তাঁকে। তার আগে তরুণীকে সার্জিকাল ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছিল।
জাতীয় মহিলা কমিশন জানিয়েছে, পর্নোগ্রাফি করতে অস্বীকার করার জন্য তরুণীকে ৬ মাস ধরে আটকে রাখা, লোহার রড দিয়ে মারধর ইত্যাদি শিরোনামে সংবাদমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন দেখে তারা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এই ঘটনার খোঁজ নেয়। অভিযোগ, উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের ওই তরুণী পর্ন ছবি এবং বার ডান্সার হিসাবে কাজ করতে অস্বীকার করায় নির্যাতনের শিকার হন। তাঁকে প্রায় ছয় মাস বন্দি করে রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার হাওড়ার বাঁকড়ায় জনৈক শ্বেতা খান এবং তাঁর পুত্র আরিয়ান খানের ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে বাড়ি ফেরেন সোদপুরের তরুণী। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত ছিল। পরিবারের অভিযোগ, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁকে একটি পানশালায় কাজ করিয়েছেন বাঁকড়ার মা-ছেলে। পর্ন ভিডিয়ো করতে চাপ দেওয়া হত তাঁকে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শুক্রবার থেকেই অভিযুক্তেরা পলাতক।
আরও পড়ুন:
মহিলা কমিশন ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে আবেদন করেছে, অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হোক। এ ছাড়া নির্যাতিতার বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এ-ও বলা হয়েছে, পুলিশ কী ব্যবস্থা নিল, তিন দিনের মধ্যে কমিশনের কাছে তার বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে।

রাজীব কুমারের উদ্দেশে পাঠানো জাতীয় মহিলা কমিশনের চিঠি। —নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে, ‘নির্যাতিতা’র পরিবার সূত্রে খবর, তিনি ভাল নেই। তাঁর কোমর ভেঙেছে। একটি পায়ের হাড় ভেঙেছে। শারীরিক অত্যাচারে দাঁতে আঘাত পেয়েছেন। এ ছাড়াও বেশ কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যা রয়েছে। মাথার আঘাত গুরুতর। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘ওর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। চিকিৎসকেরা দেখছেন। প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ, যাদের জন্য ওর এই অবস্থা তারা যেন উচিত শিক্ষা পায়।’’