Advertisement
E-Paper

বানভাসি খানাকুলে গাড়ি থেকে ‘লুট’ ত্রাণ! তৃণমূলের দাবি, বিজেপি খেপাচ্ছে মানুষকে, পাল্টা খোঁচা

অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছে আরামবাগ মহাকুমার খানাকুল, পুরশুড়া এবং গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত এক দশকে এমন বন্যা পরিস্থিতি দেখেননি হুগলি জেলার মানুষজন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫২
relief

যে ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে শোরগোল। —নিজস্ব চিত্র।

বানভাসি এলাকা। জলময় বাড়িঘর থেকে রাস্তাঘাট। স্থানীয়দের সাহায্যের জন্য প্রশাসনের তরফে ত্রাণ পাঠানো হয়েছিল। একটি ম্যাটাডরে শুকনো খাবারদাবার-সহ বেশ কিছু জিনিস রাখা ছিল। গাড়িটি ছিল হুগলির খানাকুল বিডিও অফিসের সামনে। অভিযোগ, সেই গাড়ি থেকে ত্রাণ লুট করে নিয়ে যান কয়েক জন। ম্যাটাডোরে উঠে যে যতটুকু পারেন, তা-ই নিয়ে রওনা দেন বাড়ির পথে। ত্রাণ লুটের অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ওই ঘটনার একটি ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তৃণমূলের অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে বিজেপি রয়েছে। তারা সাধারণ মানুষকে এ সব কাজ করতে উস্কে দিয়েছে। বিজেপি অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া জানিয়েছেন, ধনিয়াখালির বিধায়ক অসীমা পাত্রের উদ্যোগে শনিবার ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। খানাকুল-১ বিডিও অফিসের সামনে ত্রাণবোঝাই গাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। সেখানেই কয়েক জন গ্রামবাসী মিলে ত্রাণ লুট করে নিয়ে যান। তৃণমূল নেতার অভিযোগ, ‘‘বিজেপি লোক খেপিয়ে এ সব করাচ্ছে। সুষ্ঠু ভাবে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে প্রশাসন থেকে। সেটা বানচাল করতেই এটা করানো হয়েছে।’’ বিধায়ক অবশ্য অন্য কথা বলছেন। অসীমা ত্রাণ লুটের কথা মানেননি। তিনি জানান শনিবার পুরশুড়ায় গিয়েছিলেন। ত্রাণ লুটের বিষয়ে কোনও অভিযোগ এখনও পাননি। আর এ নিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা স্বপন পালের মন্তব্য, ‘‘মানুষ হাহাকার করছে। ত্রাণ নেই গত কয়েক দিন ধরে। মানুষ দুর্বিষহ অবস্থায় আছে। তার মধ্যেও শাসকদল রাজনীতি করছে।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘ত্রাণ না পেলে লুট তো হবেই। না খেয়ে মানুষ মরবে নাকি!’’

প্লাবনের জল কমলেও খানাকুলের বন্যা কবলিত এলাকার পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছে আরামবাগ মহাকুমার খানাকুল, পুরশুড়া এবং গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত এক দশকে এমন বন্যা পরিস্থিতি দেখেননি আরামবাগের মানুষ। অন্তত পাঁচ লক্ষ মানুষ জলবন্দি ছিলেন। ভেঙে গিয়েছে অনেক মাটির বাড়ি। পাকা বাড়ি পর্যন্ত জলের তোড়ে ভেঙেছে। এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বাড়িঘর ছেড়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন উঁচু জায়গায় কিংবা ত্রাণশিবিরে। পানীয় জল ও খাবারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে বেশ কিছু এলাকায়। পরিস্থিতি দেখতে রবিবার ওই এলাকাগুলিতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি কিশোরপুর অঞ্চলের তালিত-সহ বেশ কয়েকটি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। বানভাসি মানুষদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। সমস্যার কথা শোনেন। মুখ্যসচিবের সঙ্গে ছিলেন হুগলি গ্রামীণের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন, জেলাশাসক মুক্তা আর্য প্রমুখ। বন্যা কবলিত মানুষদের হাতে খাবার, জামাকাপড় তুলে দেন মুখ্যসচিব। পন্থ বলেন, ‘‘আমরা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। বানভাসি মানুষদের সব রকমের সাহায্য করা হবে। আস্তে আস্তে সবার কাছে সাহায্য পৌঁছবে। জল একটু নামলেই বাঁধের কাজ শুরু হয়ে যাবে। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বলা হয়েছে যাতে বাঁধের কাজ ভাল ভাবে করা হয়। যাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’

আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগ নৌকা করে খানাকুলের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বন্যাদুর্গতদের খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না-সহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া এবং কর্মাধ্যক্ষেরাও পৌঁছে গেছেন ত্রাণ নিয়ে। যদিও নিচু এলাকাগুলিতে এখনও এককোমর জল জমে রয়েছে। এ পর্যন্ত মারোখানা, কিশোরপুর, বউবাজার-সহ খানাকুলের ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন। পুরশুড়া এলাকার মানুষজন এখনও জলযন্ত্রণা ভোগ করছেন।

Khanakul Relief TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy