ছোটরা পড়ছে। সেই ঘরে রান্নাও হচ্ছে। বাড়িতে মায়ের পাশে নয়, এই দৃশ্য হাওড়ার আমতা ১ ব্লকের সিরাজবাটী চক্রের উদং উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শুধু কি তাই! ঝমাঝম বৃষ্টিতে টিনের চালের নীচে খুদে পড়ুয়ারা ক্লাস করে মাথায় ছাতা ধরে।
এই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়ানোয় শোরগোল পড়েছে। প্রধান শিক্ষিকা নীতু সাহার খেদ, অতিরিক্ত ক্লাসঘর এবং মিডডে মিলের রান্নাঘরের জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরে একাধিক বার জানিয়েও কিছু হয়নি। তবে ওই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়ানোয় বেজায় ক্ষুব্ধ হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ।
প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘সংসদ সভাপতির সঙ্গে নিজে দেখা করে সমস্যার কথা জানিয়েছি। শোকজ় করলে আমি উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’’ এই বিদ্যালয়ে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী ৮৩ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা পাঁচ জন। পাকা ছাদযুক্ত দু’টি ঘর আছে। প্রধান শিক্ষিকা জানান, তাতে সব ক্লাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল। তাই, বছর আড়াই আগে স্কুলে থাকা কিছু পুরনো টিন ও জানলা ব্যবহার করে ভবন ঘেঁষে একটি ঘর করা হয়। এখানে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়। আলাদা রান্নাঘর না থাকায় সেখানেই মিডডে মিল রান্না হয়।
শুক্রবার প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে পড়ুয়ারা ছাতা মাথায় ক্লাস করছে, এমন ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরেই ওই সন্ধ্যায় উদং ১ পঞ্চায়েতের তরফে টিনের চালের উপরে প্লাস্টিক চাপানো হয়। তবে, যে ঘরে রান্না হয়, তার চালের উপরে প্লাস্টিক চাপানো কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন উঠছে। শনিবার দেখা গেল, ওই ঘরে বাচ্চারা পড়ছে। অন্য পাশে রাঁধুনিরা বসে আনাজ কাটছেন। গ্যাস জ্বালিয়ে রান্না হচ্ছে।
পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা মান্না বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। সমাজমাধ্যমে দেখার পরেই আপাতত বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য টিনের ছাউনির ওপর প্লাস্টিক চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি পাকা ঘর কী ভাবে করা যায়, চিন্তাভাবনা চলছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)