Advertisement
E-Paper

Potato: আলু আগুন, তবু চাষির মুখ ভার

এখন খোলা বাজারে জ্যোতি আলু বিকোচ্ছে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে। চন্দ্রমুখীর দাম আরও বেশি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২২ ০৫:৪১
গোঘাটের একটি জমি থেকে আলু তুলে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে।

গোঘাটের একটি জমি থেকে আলু তুলে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে। ফাইল চিত্র।

বাজারে ছেঁকা দিচ্ছে আলুর দাম। নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের। কিন্তু চাষিদের মুখে হাসি ফুটল কই?

এখন খোলা বাজারে জ্যোতি আলু বিকোচ্ছে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে। চন্দ্রমুখীর দাম আরও বেশি। চাষিরা মানছেন, গত বেশ কয়েক বছরের তুলনায় তাঁরা এ বার পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দাম পাচ্ছেন। কিন্তু যে হারে চাষে খরচ হয়েছে, তাতে লাভের কড়ি ঘরে বিশেষ ঢুকছে না। বাড়তি দামে ফড়েদের কারসাজি দেখছেন চাষি এবং ব্যবসায়ীদের একাংশ।

রাজ্যের তিন প্রধান আলু উৎপাদক জেলা হুগলি, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। হুগলিতে তারকেশ্বর ও সংলগ্ন এলাকা আলুর অন্যতম বড় ব্যবসাস্থল। বৃহস্পতিবার চাষিরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের জ্যোতি আলু বেচেছেন ৮৫০-৯০০ টাকা বস্তা (৫০ কেজি) দরে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা তা ১১২০-১১৫০ টাকায় বেচেন পরবর্তী ধাপের ব্যবসায়ীদের কাছে। আলু বাছাই, পরিবহণ-সহ অন্যান্য খরচ ধরে তাঁরা ওই বাড়তি টাকা নেন। পাইকারদের থেকে ফড়েরা আলু কিনে কলকাতা-সহ স্থানীয় বাজারগুলিতে পৌঁছে দেন। খুচরো ব্যবসায়ীদের থেকে সাধারণ মানুষ ৩০-৩২ টাকায় এক কেজি আলু কিনছেন। চাষিদের অনুযোগ, বাজারে দাম এতটা চড়ে গেলেও তাঁরা রয়েছেন সেই তিমিরেই।

কেন?

তারকেশ্বরের রামনগরের চাষি অনুপ ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার পাঁচ বিঘে জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। নিম্নচাপের কারণে আরও তিন বিঘেতে করতে পারিনি। মরসুমের শুরুতেই তিন বারের নিম্নচাপ আমাদের ডুবিয়ে দিয়েছে। যেখানে বিঘাপ্রতি আলু চাষে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়, এ বার তা ৩৫ হাজার হয়েছে। আলুবীজের দাম খুব চড়া ছিল। সার, কৃষিমজুরের মজুরি— সব মিলিয়েই আলু ভাল দামে বিক্রি করেও লাভ করতে পারলাম না।’’

তারকেশ্বরেরই চাঁপাডাঙার আলুচাষি রাম মিত্রের গলায় একই আক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘‘২৫ বিঘেতে আলু চাষ করেছিলাম। এখন পাইকারদের কাছে আলুর দামও ভাল মিলছে। কিন্তু সার, বীজ, কৃষিমজুর মিলিয়ে উৎপাদনের খরচ মাত্রাছাড়া হয়েছে। তার জেরেই আলুর দাম ভাল হলেও আমাদের অবস্থা ভাল হল না।’’

কিন্তু, খোলা বাজারে আলুর দাম এতটা চড়া কেন? রামের মনো অনেক চাষিই মনে করেন, ‘‘পরিবহণ খরচ ধরেও বাজারে আলুর দাম বড়জোর কেজিপ্রতি ২৭-২৮ টাকা হওয়ার কথা। ফড়েদের কারসাজিতেই শহরাঞ্চলে তা ৩০ টাকা ছাড়িয়েছে।’’ রাজ্যের আলু ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান লালু মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘আলুর দাম পাইকারি বাজারে চড়া হলেও উৎপাদনে বাড়তি খরচের জন্যই চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। তবে খোলা বাজারে আলুর দাম এখন ২৮ টাকা কেজির মধ্যেই থাকা উচিত।’’

ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি বছরে রাজ্যে উৎপাদিত আলুর পরিমাণ ৯০ লক্ষ টনের আশেপাশে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এই পরিমাণ কিছুটা কম। গত পয়লা মে থেকে রাজ্যের ৪৬৪টি হিমঘরই খুলে গিয়েছে। এখন হিমঘর থেকে বের হওয়া আলুই বাজারে বিকোচ্ছে। এ বার রাজ্যের হিমঘরগুলিতে মোট ৬৩ লক্ষ টন আলু রেখেছেন চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। গত বছর রাজ্যের হিমঘরগুলিতে সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ ছিল সাড়ে ৭২ লক্ষ মেট্রিক টন।

Price Hike Potato Prices
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy