Advertisement
০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Serampore

ভাষাশহিদ স্তম্ভ ভাঙা, রেলিংয়ে শুকোয় কাপড়

বাংলা হরফ তৈরির পুরোধা শ্রীরামপুর। বাংলা ভাষা চর্চার ক্ষেত্রে এই শহরের গরিমা রয়েছে। ‘আ মরি বাংলা ভাষা’ নামে একটি সংগঠনের পরিকল্পনায় ২০১৮ সালে শহরের রায়ঘাটের পাশে গঙ্গাপারে ওই স্মারক স্তম্ভ তৈরি করে পুরসভা।

‘অ’-এর একপাশের অংশ ভেঙেছে (চিহ্নিত)।

‘অ’-এর একপাশের অংশ ভেঙেছে (চিহ্নিত)। —নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১০:১৫
Share: Save:

বাংলা ভাষা রক্ষার আন্দোলনের স্মৃতিতে শ্রীরামপুরে ভাষা শহিদ স্মারক স্তম্ভ রয়েছে। সেটি ঘিরে খোলা জায়গা রয়েছে ‘ভাষাবাগান’ নামে। কিন্তু তার রক্ষণাবেক্ষণে বিস্তর প্রশ্ন। স্মম্ভটির একটি অংশ ভেঙে গিয়েছে দীর্ঘ দিন আগে। আশপাশের কিছু লোক বাগানের রেলিংয়ে কাপড় শুকোতে দেন। ইদানীং ভাষা বেদির রেলিংয়েও ওই দৃশ্যে ব্যথিত শহরবাসী। ওই স্মারক সংস্কার এবং বাগানের যথাযথ সংরক্ষণের দাবি করছেন তাঁরা। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও অবহিত। শীঘ্রই ওই কাজে হাত দেওয়া হবে।

বাংলা হরফ তৈরির পুরোধা শ্রীরামপুর। বাংলা ভাষা চর্চার ক্ষেত্রে এই শহরের গরিমা রয়েছে। ‘আ মরি বাংলা ভাষা’ নামে একটি সংগঠনের পরিকল্পনায় ২০১৮ সালে শহরের রায়ঘাটের পাশে গঙ্গাপারে ওই স্মারক স্তম্ভ তৈরি করে পুরসভা। সংস্কৃতি চর্চার একটি কেন্দ্র হয় এই উদ্যান। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস সহ নানা অনুষ্ঠান হয়।

স্মারক স্তম্ভের চূড়ায় একটি ‘অ’ অক্ষর রয়েছে। সেটিকে আগলে রয়েছে দু’টি হাত। জানা যাচ্ছে, তারই একটি ভেঙেছে প্রায় এক বছর আগে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান হয় ওই জায়গায় থার্মোকলের হাত লাগিয়ে। সংগঠনের সম্পাদক সমীর সাহা জানান, কয়েক মাস আগেই তাঁরা লিখিত ভাবে পুরসভায় বিষয়টি জানান। পুর পারিষদ (পূর্ত) সন্তোষ সিংহের ঘরে বৈঠক হয় তাঁদের ডেকে। পুরসভার তরফে পরিদর্শনও হয়। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।

সমীর বলেন, ‘‘শুধু স্মারক সংস্কার নয়, উটকো লোক যাতে বেদিতে উঠতে না পারে, রেলিংয়ে জামাকাপড় মেলা যাতে বন্ধ হয়, উদ্যানে যাতে টাইলস বসানো হয়, সে সবের আর্জি জানাই আমরা।’’ সংগঠনের সভাপতি, কবি রামকিশোর ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘যথোচিত মর্যাদার সঙ্গে ওই স্থানের সংরক্ষণ জরুরি।’’

স্মারক স্তম্ভের দূরবস্থার কথা সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন সৌমিত্র দেব নামে এক যুবক। রক্ষণাবেক্ষণে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘স্তম্ভের ওই অবস্থা এবং যে ভাবে রেলিংয়ে জামাকাপড় মেলা হয়, তা দেখে শ্রীরামপুরবাসী হিসাবে লজ্জায় মাথা কাটা যায়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘লোকমুখে উদ্যানটির নাম ভাষাবাগান হলেও কোনও সাইনবোর্ড নেই।’’ দেশ-বিদেশের বহু মানুষ প্রাচীন এই শহরের নানা নিদর্শন দেখতে আসেন। অনেকেই মনে করেন, ওই জায়গার এমন অরক্ষিত অবস্থায় শহরের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এই পরিস্থিতি ভাষা শহিদদের প্রতি অশ্রদ্ধা, অপমান। এর আগে ওই বাগানে পশুহাট বসা নিয়ে আপত্তি ওঠে। শহরবাসীর দাবিকে মান্যতা দিয়ে পশুহাট পাশে সরানো হয়।

স্থানীয় পুরসদস্য তথা পুর পারিষদ সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘যথাযথ মর্যাদা দিয়েই ওই জায়গা সংরক্ষণ করা হবে। স্থানীয় কিছু মানুষ ওখানে জামাকাপড় মেলছেন, নিষেধ শুনছেন না। তাঁদের জন্য কাপড় মেলার বিকল্প জায়গা করে দেওয়া হবে। ভাষাবাগানে টাইলস বসানো হবে। সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিষয়টি কাউন্সিলরদের বোর্ড মিটিংয়ে চূড়ান্ত হয়েছে। পুজো চলে আসায় কাজ করা যায়নি। ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের আগেই করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

lack of maintenance Serampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy