Advertisement
E-Paper

নেতারা ফিরে দেখছেন না, ক্ষোভ খানাটি গ্রামে

খুনের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। মৃতের পরিবারকে সাহায্য এবং গ্রামে নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। কিন্তু এখনও তার কিছুই চোখে দেখতে পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ০৯:০৬
খানাটি গ্রামের রায়পাড়ার রাস্তার বেহাল দশা।   ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

খানাটি গ্রামের রায়পাড়ার রাস্তার বেহাল দশা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

আর কেউ ফিরে তাকাচ্ছেন না!
ক্ষোভ বাড়ছে খানাটি গ্রামের। বিজেপি প্রভাবিত গোঘাটের প্রত্যন্ত গ্রামটির বেশ কিছু দাবি ছিল। মাসচারেক আগে এখানকার বিজেপি কর্মী গণেশ রায়ের অপমৃত্যু হয়েছিল। উত্তাল হয়েছিল গ্রাম। খুনের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। মৃতের পরিবারকে সাহায্য এবং গ্রামে নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। কিন্তু এখনও তার কিছুই চোখে দেখতে পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা। বিজেপি নেতারাও আর গ্রামের পথ মাড়াচ্ছেন না বলে তাঁদের দাবি।
মৃতের বড় ছেলে ধর্মদাসের খেদ, ‘‘বিধায়ক প্রতিশ্রুতি রাখেননি। তিনটি জবকার্ড ছাড়া আমার চাকরি, গীতাঞ্জলি প্রকল্পের পাকা ঘর, ভাইয়ের ব্যবসা ইত্যাদি নানা প্রতিশ্রুতি থাকলেও কিছু পাইনি। তৃণমূলের নেতারা আর ফিরেও তাকান না। বিজেপি নেতারাও খবর নেন না।’’
গ্রামবাসীদের পক্ষে মনসা রায় এবং অশোক রায়ের অভিযোগ, ‘‘বাম আমলের একটি নলকূপ নতুন করে বসানো ছাড়া বিধায়কের প্রতিশ্রতিমতো গ্রামে আলো, ছ’টি কংক্রিটের রাস্তা, মনসাতলার পুকুরঘাট বাঁধানো— এ সব কিছু হয়নি। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করা হয়েছে।’’ এর ফল বিজেপি পাবে বলেও দাবি করেছেন অশোকবাবুরা।
প্রতিশ্রুতি পূরণ না-করার অভিযোগ মানেননি গোঘাটের তৃণমূল বিধায়ক মানস মজুমদার। তাঁর দাবি, “যা কথা দিয়েছিলাম, সে সবেরই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গ্রামোন্নয়নে দু’টি রাস্তা এবং পুকুরঘাট বাঁধানোর কাজে ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাকিগুলিও সব হবে।”
অন্যদিকে, গ্রামের দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ প্রসঙ্গে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “আমরা নিশ্চিত ছিলাম মৃতের পরিবার এবং গ্রামের মানুষ তৃণমূলের ভাঁওতাবাজি টের পাবেন। শীঘ্রই আমরা ওই পরিবার এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে গোঘাট রেলস্টেশন সংলগ্ন একটি গাছে গণেশের ঝুলন্ত মৃতদেহ মেলে। মৃতের পরিবার এবং স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছিলেন। বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন করে নোংরা রাজনীতির অভিযোগ তোলে তৃণমূল। দু’পক্ষের গোলমালও হয়।
সেই রাতেই গ্রামবাসীরা দেখেন, বিধায়ক মানস মজুমদার মৃতের বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে সমবেদনা জানাচ্ছেন। পরের দিন ভোরে একটি গাড়ি এলে গণেশের পরিবারের লোকেরা ঘরে তালা-চাবি মেরে তাতে উঠে চলে যান। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের ওই বাড়িতে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল হয়। ওই পরিবারের লোকদের অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে দুপুরে এসডিপিও অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ প্রমুখ বিজেপি নেতারা।
সে দিন সন্ধ্যায় ফিরে মৃতের বড় ছেলে জানান, তাঁদের বিধায়কের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে তাঁদের পাকা ঘর, তাঁর চাকরি, ভাইয়ের ব্যবসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বিধায়ক। গ্রামের উন্নয়নেরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় জানিয়ে ধর্মদাস বলেছিলেন, ‘‘বাবার মৃত্যু নিয়ে আর কোনও গোলমাল চাইছি না।”
আর গোলমাল হয়নি। কিন্তু প্রতিশ্রুতিও পূরণ হয়নি। তাই ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, গণেশ আত্মঘাতী হয়েছেন। পরবর্তী তদন্তের জন্য দেহাংশ ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট এখনও মেলেনি।

Hooghly Goghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy