Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Panchla

পাঁচ ট্রাক বাজি! উদ্ধারের পরেও আতঙ্ক শাঁখখালিতে

বুধবার রাতভর তল্লাশিতে ওই বাড়ি থেকে পাঁচটি ট্রাকে ১৬ হাজার কেজিরও বেশি বাজি উদ্ধার হওয়ার পরে গ্রামবাসীরা মনে করছেন, বাড়ি থেকেও বাজির ব্যবসা চালাত বাপি।

এই বাড়ি (ইনসেটে) থেকেই মিলেছে বাজির পাহাড়। নিজস্ব চিত্র

এই বাড়ি (ইনসেটে) থেকেই মিলেছে বাজির পাহাড়। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত জানা
পাঁচলা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ০৯:৩৩
Share: Save:

কিছুতেই আতঙ্ক কাটছে না গ্রামবাসীর!

প্রতিদিন পাঁচলার শাঁখখালি গ্রামের বাসিন্দারা দেখতেন, সন্ধ্যা নামলেই শেখ বাপির বাড়ির সামনে গাড়ি এসে দাঁড়ায়। বাড়ির বিশাল লোহার গেট খুলে যায়। গাড়ি ভিতরে ঢুকে যায়। কিন্তু কেন? সে উত্তর জানা ছিল না।

বুধবার রাতভর তল্লাশিতে ওই বাড়ি থেকে পাঁচটি ট্রাকে ১৬ হাজার কেজিরও বেশি বাজি উদ্ধার হওয়ার পরে গ্রামবাসীরা মনে করছেন, বাড়ি থেকেও বাজির ব্যবসা চালাত বাপি। গাড়ি করে লোকজন বাজি কিনতে আসত।

সাঁকরাইলের রানিহাটি বাজারে বাপির হার্ডওয়্যার এবং রকমারি জিনিসের দোকান আছে। তার আড়ালে বাপি বাজির ব্যবসা করত, এ কথা তাঁদের অনেক দিনের জানা বলে গ্রামবাসীদের দাবি। কিন্তু বাপি যে বাড়িতেও অত বাজি মজুত করেছিল, তা তাঁদের জানা ছিল না। তাঁরা জানান, গ্রামবাসীদের কারও ওই বাড়িতে প্রবেশাধিকার ছিল না।

গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন গ্রামবাসী। ওই বাড়ি থেকে পাঁচলা থানার দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটার। বছর দুয়েক আগেও বাপির বাড়ি থেকে কিছু বাজি বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। তারপরেও কী করে বাপি ছাড় পেয়ে যায় এবং অত পরিমাণ বাজি মজুত করার সাহস পায়, এ প্রশ্নও উঠছে।

এক গ্রামবাসীর দাবি, ‘‘বাপি যে বাজির ব্যবসা করত, এটা পুলিশ জানত। কিন্তু এত পরিমাণ বাজি মজুত করা আছে, এটা হয়তো পুলিশের ধারণা ছিল না।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাপির বাজি বিক্রির কোনও রকম অনুমতি ছিল না। বছর দুয়েক আগে অভিযানের সময়ে বাপি পালিয়েছিল। এ বারও পালিয়েছে। খোঁজ চলছে। গ্রামে নিয়মিত নজরদারি চলে বলেই বাজি উদ্ধার করা গিয়েছে।’’

বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে কোনও পুরুষ ছিলেন না। বাড়ির মহিলারা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে, গ্রামজুড়ে চর্চা ছিল বাপিকে নিয়েই। এ প্রসঙ্গেই ফিরে এসেছে এগরা এবং বজবজের বাজি-বিস্ফোরণের কথা। এক গ্রামবাসীর আশঙ্কা, ‘‘ওই বাড়িতে বিস্ফোরণ হলে এগরার চেয়ে বড় ঘটনা ঘটত। আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগত। কত জনের যে প্রাণ যেত!’’

এত বাজি উদ্ধারের ঘটনায় সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। স্থানীয় সিপিএম নেতা নবীন ঘোষের অভিযোগ, ‘‘গোটা রাজ্য বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে আছে। শাসক দল পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রতিটি থানা এলাকায় বারুদ মজুত করছে। যাতে ভোটের আগে মানুষকে ভয় দেখানো যায়। আশ্চর্যের বিষয়, একটি বাড়ি থেকে পাঁচ ট্রাক নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার হল, অথচ, কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। আসলে পুলিশের মদতেই সব কিছু চলছে।’’

অভিযোগ মানেনি তৃণমূল। হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূল সভাপতিকল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশ বাজি উদ্ধার করছে, এটা ভাল। যারা বেআইনি ভাবে বাজি মজুত করেছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনানুয়ায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchla Firecracker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE