বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য মাসিক ২০ টাকা ‘পরিষেবা মূল্য’ নেওয়া শুরু হয়েছে ডানকুনি শহরে। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশিকা অনুয়ায়ী গত জানুয়ারি মাস থেকে এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ নিয়ে শহরবাসী অবশ্য উষ্মা প্রকাশ করছেন। তাঁদের প্রশ্ন, পুর-কর দেওয়ার পরেও আবর্জনা সংগ্রহের জন্য আলাদা টাকা কেন দিতে হবে? পরিষেবার মান নিয়ে পুরসভার দিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পুরকর্তারা তা মানেননি।
কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুয়ায়ী কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতর নির্দেশ দিয়েছে, প্রত্যেক পুরসভাকেই বাধ্যতামূলক ভাবে পরিষেবা মূল্য নিতে হবে। না হলে সংশ্লিষ্ট খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান বন্ধ হয়ে যাবে। ডানকুনি পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই নির্দেশিকার সাপেক্ষেই সম্প্রতি ২১টি ওয়ার্ডে ধাপে ধাপে বাড়ি, আবাসন, হোটেল, বাণিজ্যিক কেন্দ্র থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য পরিষেবা মূল্য নেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে।
ডানকুনি ফুটবল মাঠ সংলগ্ন একটি আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল জমার সমস্যার সুরাহা করতে পারেননি পুর-কর্তৃপক্ষ। আমরা পুরকর দিই, এখন আবার বাড়ির আবর্জনা তুলতেও টাকা চাইছে পুরসভা। এতে শুধু আমি নই, অনেকই আপত্তি তুলছেন।’’ পুর-কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে পুরসভায় স্মারকলিপি দিয়েছে বিজেপি। শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি তথা ডানকুনির প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিষেবা দিলে তবেই পরিষেবা মূল্য নেওয়ার অধিকার পুরসভার জন্মায়। স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পে ডানকুনি পুরসভা চারটি ট্রাক্টর এবং বেশ কিছু আবর্জনাবাহী ছোট গাড়ি পেয়েছিল। দু’একটা চলে। বাকি পড়ে নষ্ট হচ্ছে। এটাই পরিষেবা!’’
অভিযোগ উড়িয়ে বর্তমান উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ রাহার বক্তব্য, ‘‘ডানকুনি শিল্প শহর। প্রায় দু’লক্ষ মানুষের বাস। বহু বিপণি, হোটেল, আবাসন রয়েছে। শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আমরা ঢেলে সাজিয়েছি।’’ এর ব্যাখ্যায় তাঁর দাবি, সাফাইয়ের কাজে একটি ঠিকাদারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডপিছু দু’জন কর্মী প্রতিদিন প্রত্যেক বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করেন। বাণিজ্যিক কেন্দ্র, হোটেল এবং বড় বিপণি থেকে দিন-রাত দু’বেলাই আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। ডানকুনি বিলের কাছে পুরসভার নিজস্ব জায়গায় আর্বজনা ফেলা হয়। সেখানে ‘নির্মল বন্ধু’রা আবর্জনা পৃথক করেন। প্লাস্টিক-সহ অপচনশীল আবর্জনা বৈদ্যবাটীতে সরকারি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে চলে যায়। পচনশীল আবর্জনা অন্য পুরসভায় কঠিন বর্জ্য প্রতিস্থাপন প্রকল্পে পাঠানো হয়। ডানকুনি বিলের কাছে পুরসভার নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প তৈরির
প্রক্রিয়া চলছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)