Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus

Coronavirus in West Bengal: চালু হল লোকাল, প্রশ্ন বিধি রক্ষায়

অনেকেরই মুখে মাস্ক দেখা গেল না। যাত্রীরা বসলেন ঠাসাঠাসি করে। দরজার সামনে জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেল‌ অনেককে।

চালু হল লোকাল ট্রেন। রবিবার উলুবেড়িয়া স্টেশনে।

চালু হল লোকাল ট্রেন। রবিবার উলুবেড়িয়া স্টেশনে। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
চুঁচুড়া ও উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৩১
Share: Save:

প্রতীক্ষার অবসান। প্রায় ছ’মাস পরে, রবিবার ফের গড়াল লোকাল ট্রেনের চাকা। যাত্রীরা খুশি হলেন। তবে, প্রশ্নও রইল।

ছুটির দিন হওয়ায় রবিবার লোকা‌লে ভিড় তুলনায় কম ছিল। তবে, রাজ্য সরকারে নির্দেশ অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিয়ে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চালানো কতটা সম্ভব হবে, প্রথম দিনেই সেই প্রশ্ন উঠে গেল। অনেকেরই মুখে মাস্ক দেখা গেল না। যাত্রীরা বসলেন ঠাসাঠাসি করে। দরজার সামনে জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেল‌ অনেককে।

এ সবই প্রাক-করোনা পর্বের পরিচিত দৃশ্য। স্টাফ স্পেশালেও ওই ছবিই দেখা যাচ্ছি‌ল। আজ, সোমবার থেকে ছবিটা কী হবে তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে অনেকের। বৈদ্যবাটীর বাসিন্দা সুতপা মুখোপাধ্যায় এবং ইন্দ্রাণী হালদার শ্রীরামপুরে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন। ট্রেন থেকে নেমে তাঁদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভেবেছিলাম রবিবার ভিড় অনেক কম হবে। দেখলাম, উল্টো। ভিড় সামলাবে কে!’’ সকালে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার উলুবেড়িয়া স্টেশনে দেখা গেল, বহু মানুষ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। মহম্মদ শামিম নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘গাদাগাদি করে ওঠানামা চলছে।’’ সকালে পান্ডুয়া স্টেশনেও ভাল ভিড় ছিল।

মাঝের কিছু দিন সাধারণ নাগরিকদের একাংশ একপ্রকার জোর করেই স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে উঠেছে‌ন। তার পরে টিকিট কেটে ওঠার ছাড়পত্র মেলে। কিন্তু ট্রেনের সংখ্যা ছিল কম। ফলে হুগলি এবং হাওড়ার মতো জেলা, যেখানে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যমই হল ট্রেন, সেখানে মানুষ সমস্যায় পড়ছিলেন। সেই সমস্যা মেটায় তাঁরা খুশি।

স্বাস্থ্যবিধি মানতে এ দিন আরামবাগ স্টেশনে রেল পুলিশ এবং নিত্যযাত্রী সংগঠন ‘আরামবাগ রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে প্রচার চালানো হয়। কিন্তু যাত্রীদের একাংশ তা কানে তো‌লেননি। কার্যত কোনও জায়গাতেই বিধি রক্ষার চেষ্টাও দেখা যায়নি রেলের তরফে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ হাওড়াগামী ট্রেনে উঠেছিলেন আরামবাগ শহরের বাসিন্দা বিমল গঙ্গোপাধ্যায়। মাস্ক না-থাকা নিয়ে তাঁর সাফাই, ‘‘ভিড়ভাট্টা নেই। তাই পরিনি। পকেটেই আছে।’’ নিত্যযাত্রী সংগঠনটির কর্মকর্তা রূপক মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, প্রায় ৯৫% মানুষের সঙ্গে মাস্ক থাকলেও সারাক্ষণ পরে থাকার অভ্যেস সকলের মধ্যে কিছুতেই তৈরি হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘মাস্ক না পরে ট্রেনে উঠলে ৫০০ টাকা জরিমানার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই জরিমানা আদায় করতে দেখিনি। বৃহত্তর স্বার্থে সেটা করলে সুফল মিলতে পারে।’’

করোনার প্রথম পর্বে গত বছরের মার্চ মাসে লকডাউনের সময় লোকাল ট্রেন বন্ধ হয়েছিল। সাড়ে ৭ মাস পরে চালু হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় গত ৫ মে ফের বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে অফিস-কাছারি খুলে যাওয়ায় বহু মানুষ এবং বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের বা রাজনৈতিক দলের তরফে লোকাল চালুর দাবি জোরালো হচ্ছিল। বিভিন্ন স্টেশনের পাশে ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা ট্রেনযাত্রীদের আশায় থাকেন। লোকাল চালু হওয়ায় তাঁরাও খুশি।

উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা কল্পনা ঘাঁটি বলেন, ‘‘কাজের জন্য হাওড়ায় যেতে হয়। বাসে যাতায়াত করতে প্রতিদিন ১০০ টাকা খরচ। রোজগারের অর্ধেক টাকাই তাতে চলে যাচ্ছিল। এ বার সুরাহা হল।’’ মগরার অমল দাস কলকাতায় কাপড়ের দোকানে কাজ করেন। তাঁর বক্তব্য, লোকাল চালু হওয়া জরুরি ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Indian Railways
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE