E-Paper

‘গাফিলতিতে’ মৃত্যু রোগীর, নার্সিংহোমে তাণ্ডব দুষ্কৃতীদের

আত্মীয়দের সঙ্গে আসা দুষ্কৃতীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ভাঙচুর চালায় নার্সিংহোমে। লুট করে নিয়ে যায় নগদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ০৯:৫৬
চিকিৎসার গাফিলতিতে তাঁর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে কয়েকশো দুষ্কৃতী নার্সিংহোমটিতে ভাঙচুর শুরু করে।

চিকিৎসার গাফিলতিতে তাঁর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে কয়েকশো দুষ্কৃতী নার্সিংহোমটিতে ভাঙচুর শুরু করে। —প্রতীকী চিত্র।

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বুধবার বেশি রাতে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার বাঁকড়ার সলপ ব্রিজের কাছে একটি নার্সিংহোমে। মৃতার আত্মীয়দের সঙ্গে আসা দুষ্কৃতীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ভাঙচুর চালায় সেখানে। লুট করে নিয়ে যায় নগদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী গভীর রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে বাঁকড়ার মুন্সিডাঙা শেখপাড়ার বাসিন্দা বছর ৩৮-এর সাবিনা ইয়াসমিন বুকে ও পেটে ব্যথা নিয়ে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হতে যান। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁর চিকিৎসা করা যাবে না জানিয়ে প্রথমে অন্য নার্সিংহোমে যেতে বলেন। সেই মতো সাবিনাকে নিয়ে পরিজনেরা চলেও যান। কিন্তু রাতে তাঁরা ফের চিকিৎসার জন্য সাবিনীকে নিয়ে সলপের ওই নার্সিংহোমেই আসেন। তখন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে ভর্তি নেন। তরুণীর চিকিৎসাও শুরু হয়। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই তিনি মারা যান। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সাবিনাকে প্রথমে নার্সিংহোমে ভর্তি না নেওয়া ও পরে চিকিৎসার গাফিলতিতে তাঁর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে কয়েকশো দুষ্কৃতী নার্সিংহোমটিতে ভাঙচুর শুরু করে।

নার্সিহোম কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা এক্স-রে মেশিন, ১৪টি কম্পিউটার, এসি, সিসি ক্যামেরা— সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। নার্সিংহোমের চেয়ার তুলে নিয়ে গিয়ে পাশের একটি খালের জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ভেঙে চুরমার দেওয়া হয়েছে নার্সিংহোমের আলো, পাখা-সহ যাবতীয় কিছু। আরও অভিযোগ, নার্সিংহোমের ক্যাশবাক্স ভেঙে লুট করা হয়েছে নগদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

ঘটনা প্রসঙ্গে ওই নার্সিংহোমের মালিক শেখ আয়ুব হোসেন জানান, পিত্তথলিতে পাথর জমেছে এবং তা থেকে বুকে ব্যথা হচ্ছে বলে একটি রিপোর্ট নিয়ে ওই রোগিণীর পরিবার এসেছিল। আয়ুব বলেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম, এত রাতে ইউএসজি করা যাবে না। পরদিন অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার ওঁদের আসতে বলি। কিন্তু ওঁরা তা সত্ত্বেও রোগীর বুকে ব্যথা হচ্ছে বলে দ্বিতীয় বার ঘুরে এসেছিলেন। তখন আমরা মহিলাকে ভর্তি নিয়ে নিই। ভর্তি হয়ে শয্যায় ১০ মিনিট ছিলেন তিনি। কিন্তু দুটো ইনজেকশন দিয়ে স্যালাইন চালু করতেই ওঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। আমরা ভেন্টিলেশনে দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পারিনি। তার পরেই কয়েকশো লোক নার্সিংহোমে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। প্রচুর টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নার্সিংহোম ভাঙচুরের ঘটনায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। বেশ কিছু নামও পাওয়া গিয়েছে। ঘটনার পর থেকে তারা বেপাত্তা। তল্লাশি চলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

police investigation Medical

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy