Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
police

বিপদঘণ্টি জ্যামার দিয়ে বন্ধ করে ব্যাগভর্তি সোনা লুট, তিন ডাকাত দোষী সাব্যস্ত হুগলিতে

বছর দু’য়েক আগে হুগলির চন্দননগরে স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থা থেকে ব্যাগবোঝাই করে সোনা লুটের ঘটনায় তিন দুষ্কৃতীকে দোষী সাব্যস্ত করল হুগলির চুঁচুড়া আদালত। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা।

Three dacoits found guilty by court for dacoity in loan giving agency at Hooghly

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দুষ্কৃতীদের। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ১৮:৪৬
Share: Save:

বছর দুয়েক আগে হুগলির চন্দননগরে স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থা থেকে ব্যাগবোঝাই করে সোনা লুটের ঘটনায় তিন দুষ্কৃতীকে দোষী সাব্যস্ত করল হুগলির চুঁচুড়া আদালত। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা। দুষ্কৃতীরা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই সংস্থাটির বিপদঘণ্টি বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই সুযোগে তারা লুট করেছিল সোনা।

আদালতে সোমবার পুলিশ জানিয়েছে, ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারে স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থায় ডাকাতিতে অভিযুক্ত বিট্টু কুমার ওরফে করণ, গুড্ডু কুমার ওরফে ধর্মেন্দ্র এবং বিট্টু কুমার ওরফে ছোট্টু পোর্টেবেল জ্যামার এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ডিটেক্টর (আরএফআইডি) ব্যবহার করে ওই সংস্থার বিপদঘণ্টি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই কারণে ডাকাতির সময় যোগাযোগে সমস্যা হয় পুলিশেরও। এর পর ডাকাতরা গ্রাহক সেজে ওই সংস্থায় ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুটপাট চালান। ওই মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি কৃষ্ণনগর আদালত থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে যোগ দেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা। কারণ, এই কাণ্ডে যেভাবে অভিযুক্তরা প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে, তাতে জাতীয় সুরক্ষা প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। আমরা এই মামলা হাতে পাওয়ার এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পেরেছি। আগামিকাল (মঙ্গলবার) মামলার সাজা ঘোষণা হবে।’’

চুঁচুড়া আদালতের সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেছে। পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ডাকাত দল ধরে।’’ সোমবার চুঁচুড়া আদালতের বিচারক শিবশঙ্কর ঘোষ অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন।

ওই মামলার তদন্তকারী আধিকারিক ছিলেন অতনু মাঝি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারে ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ঘিরে ফেলে এলাকা। ডাকাত দলটি লুট করা সোনা নিয়ে পালাতে গিয়ে পুলিশের মুখে পড়ে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা জবাব দেয়। চন্দননগর থেকে দুই দুষ্কৃতীকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করে পুলিশ। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় নাকা তল্লাশি। এর পর, চুঁচুড়ার তুলোপট্টি ঘাটের কাছে এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে চুঁচুড়া থানার পুলিশ। সেখানেও গুলি চলে। তবে এক দুষ্কৃতী পালিয়ে যান। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ডাকাত দলটি ভাড়া ছিল সিঙ্গুরের একটি বাড়িতে। সেই ঘরে তল্লাশি চালিয়ে একটি ডায়েরি উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর ধাপে ধাপে এগোয় তদন্ত। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, ডাকাতি, ডাকাতির সময় মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার, অস্ত্র আইন-সহ নানা ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ধৃতরা এর আগে আসানসোল-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থায় ডাকাতি করে ২০০ কিলোগ্রাম সোনা লুট করেছে বলে তদন্তকারীদের ধারণা। গ্রেফতারের পর তারা জেল থেকে সাক্ষীদের হুমকি দিত বলেও জানা গিয়েছে তদন্তকারীদের সূত্রে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police arrest Guilty dacoity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE