কোদাল হাতে সাফাই করতে নেমেছেন অসিত মজুমদার। ছবি: তাপস ঘোষ
মজে যেতে বসা চুঁচুড়ার রসভরা খাল সংস্কারে উদ্যোগী হলেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে মঙ্গলবার কোদাল হাতে ওই খাল পরিস্কার করতে নামলেন তিনি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে বোঝা গেল, এ কাজ কোদাল-বেলচা দিয়ে হবে না। শেষে ঠিক হয়েছে, সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করা হবে।
খালটি গঙ্গায় গিয়ে মিশেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই এটি বেহাল। তার উপরে ব্যান্ডেল চার্চ সংগগ্ন জায়গায় চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজন বা পর্যটকের দল বিভিন্ন জিনিস অবাধে ফেলেন ওই খালে। প্লাস্টিক থেকে থার্মোকলের থালা-বাটিতে খালটি ভরে খালটি কার্যত অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। ছড়াচ্ছে দূষণ। গত রবিবার দলীয় কর্মীদের নিয়ে চুঁচুড়ার জোড়াঘাটে গঙ্গাপুজো করতে যান অসিত। তখনই বেহাল নিকাশি নিয়ে নাগরিকদের কেউ কেউ তাঁর কাছে অভিযোগ করেন। রসভরা খালের দুর্দশার কথাও উঠে আসে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, খালটি সংস্কার করা না হলে আগামী বর্ষায় এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়বে। বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরেই বিধায়ক নড়েচড়ে বসেন।
এ দিন সকালে পুর-প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন বিদায়ী কাউন্সিলর এবং পুরসভার আধিকারিকে নিয়ে অসিত ব্যান্ডেল চার্চ সংলগ্ন জায়গায় ওই খালের পাড়ে যান। পুরকর্মীদের পাশাপাশি নিজেও সাফাইয়ের কাজে নেমে পড়েন। বেশিক্ষণ অবশ্য কাজ চালানো যায়নি। পুরকর্মীরা জানান, খালটির যা দশা, তাতে এই ভাবে সংস্কার সম্ভব নয়। যন্ত্র নামিয়ে ওই কাজ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বিধায়ক পুরকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে বিধায়ক জানান, পুরসভার তরফে এই কাজের জন্য রাজ্যের রাজ্য পুর উন্নয়ন নিগমের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। যত্রতত্র যাতে আবর্জনা না ফেলা হয়, সে জন্য পুরসভা ওই জায়গায় একটি ভ্যাট করবে বলেও ঠিক করা হয়।
ব্যান্ডেলের প্রবীণ বাসিন্দা অমৃতেন্দু বসু বলেন, ‘‘ব্যান্ডেলের একটি বড় অংশের নিকাশি জল এই খালের মাধ্যমে নির্গত হয়। আবর্জনায় ভরে খাল বুজে গেলে অশেষ দুর্গতি হবে। দেরিতে হলেও বিধায়ক ও পুরসভার উদ্যোগ খারাপ নয়। তবে কাজের কাজ যেন হয়, সেটা
দেখতে হবে।’’
খাল সাফাই নিয়েও অবশ্য তৃণমূলকে খোঁটা দিতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউয়ের কটাক্ষ, ‘‘ভোট যত সামনে আসছে, বুজে যাওয়া নর্দমা, বেহাল পুকুর, মজে যাওয়া খাল বিধায়কের নজরে আসছে। ভাবছেন আবর্জনায় বেলচা চালিয়ে ভোট পাবেন। খালের এই অবস্থার কথা আগে কেউ ওঁকে বলেননি!’’
বিধায়ক অবশ্য সমালোচনা গায়ে মাখছেন না। তিনি বলছেন, ‘‘বিজেপি উন্নয়ন বোঝে না, বোঝে রাজনীতি। সেটাই করছে। এতে লাভ হবে না। মানুষের যা প্রয়োজন আমরা
সেটাই করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy