Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Corona

করোনার জেরে যক্ষ্মা চিকিৎসায় ক্ষতি, উদ্বেগ হাওড়ায়

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা মনে করছেন, বর্তমানে অনেকেই জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে বাড়িতে থেকে যাচ্ছেন।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২১ ০৬:৩৪
Share: Save:

গত এক বছরে করোনা আবহের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমেছে হাওড়ায়। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। তাঁদের আশঙ্কা, করোনার ভয়ে যক্ষ্মা রোগীরা হাসপাতালে না আসায় তাঁদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। সরকারি হিসেবে সংখ্যা কমলেও স্বাস্থ্যকর্তাদের ধারণা, যক্ষ্মা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা অনেকটাই বেশি। কারণ, যে সমস্ত যক্ষ্মা সংক্রামক, তা হাঁচি-কাশি থেকেই অন্যের মধ্যে ছড়াতে পারে। বুধবার হাওড়ায় ‘বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা মনে করছেন, বর্তমানে অনেকেই জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে বাড়িতে থেকে যাচ্ছেন। করোনা হতে পারে ভেবে অনেকেই হাসপাতালে আসছেন না। কিন্তু এঁদের মধ্যে সকলেই যে করোনায় আক্রান্ত, তা নয়। সাধারণ সর্দি-জ্বরের পাশাপাশি কেউ কেউ যক্ষ্মাতেও আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশেরই ঠিক মতো চিকিৎসা হচ্ছে না। হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা যা ছিল, ২০২০ সালে তা অনেকটাই কমে গিয়েছে। ২০১৭-এ হাওড়া জেলায় যক্ষ্মায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০৯৭। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৬০৩২। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৯ সালে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা আরও বাড়ে। সে বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ৬১৮৭। অথচ, ২০২০ সালে ওই সংখ্যাটা কমে হয়েছে ৩৬৪১।

হাওড়া জেলায় যক্ষ্মার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক, চিকিৎসক সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় পরিতৃপ্তির কোনও জায়গা নেই। কারণ, গত বছর লকডাউন থাকায় হাওড়া জেলায় অনেক যক্ষ্মা রোগী হাসপাতালে আসেননি। ফলে কারা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তা চিহ্নিত করার কাজ কঠিন হয়ে পড়ছে। ঠিকমতো চিকিৎসা না হওয়ায় যক্ষ্মা ছড়ানোরও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’’

পরিসংখ্যান অনুযায়ী হাওড়ায় বর্তমানে যত জন যক্ষ্মা রোগী আছেন, তার মধ্যে পুরুষ রোগীর সংখ্যা ৬৪ শতাংশ ও মহিলা রোগীর সংখ্যা ৩৬ শতাংশ। হাওড়ার প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বিনা খরচে যক্ষ্মার চিকিৎসা হয়। এ দিন ‘বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস’ উপলক্ষে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে এ দিন যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে মাস্ক ও ফল বিতরণ করা হয়।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যক্ষ্মা রোগীদের নিখরচায় ওষুধের পাশাপাশি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে যক্ষ্মার ওষুধও বিলি করা হয়। এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়মিত যক্ষ্মার পরীক্ষা করা হয়। তাঁর মতে, আক্রান্তদের উচিত করোনার আতঙ্কে বিনা চিকিৎসায় বসে না থেকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা করানো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE