E-Paper

জাতীয়স্তরে যোগাসনে সাফল্য হুগলির দুই মেয়ের

চন্দননগর উষাঙ্গিনী বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সৃজার হাতেখড়ি প্রশিক্ষক অমিতকুমার দাসের কাছে, মাত্র সাত বছর বয়সে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৫০
জয়ী সৃজা সাহা (বাঁ দিকে) ও ঐন্দ্রিলা বর।

জয়ী সৃজা সাহা (বাঁ দিকে) ও ঐন্দ্রিলা বর। —নিজস্ব চিত্র।

জাতীয়স্তরে যোগা প্রতিযোগিতায় জুনিয়র বিভাগে সোনা জিতল চন্দননগরের সৃজা সাহা ও শ্রীরামপুরের মেয়ে ঐন্দ্রিলা বর।

‘যোগা ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া’র অধীন ‘অসম যোগা অ্যাসোসিয়েশনে’র উদ্যোগে ২৩-২৬ নভেম্বর ৪৮ তম সাব জুনিয়র ও জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসেছিল গুয়াহাটির দেশভক্ত তরুণ রাম ফুকন ইনডোর স্টেডিয়ামে। ৩০টি রাজ্যের প্রায় ২০০০ প্রতিযোগী যোগ দেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে গিয়েছিলেন ৪০ জন।

চন্দননগর মহাডাঙা ২ কলোনির বাসিন্দা সৃজা ‘ট্র্যাডিশনাল যোগা’, ‘আর্টিস্টিক পেয়ার’ ও ‘ফ্রি-ফ্লো যোগা’-তে যোগদান করে সব ক’টিতেই সোনা জিতেছে। পিয়ারাপুর পূর্বপাড়ার ঐন্দ্রিলা ‘ট্র্যাডিশনাল যোগা’ ও ‘রিদিমিক ইভেন্টে’ সোনা ও ‘সিঙ্গেল আর্টিস্টিকে’ রুপো জিতেছে। এই জয়ের পরে সিঙ্গাপুরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামার যোগ্যতা অর্জন করেছে দুই কন্যা।

চন্দননগর উষাঙ্গিনী বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সৃজার হাতেখড়ি প্রশিক্ষক অমিতকুমার দাসের কাছে, মাত্র সাত বছর বয়সে। কিছু দিন পর থেকেই সৃজা জেলা ও রাজ্যস্তরে বাজিমাত করে প্রথম বার জাতীয় স্তরে সুযোগ করে নেয়। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সাত বার জাতীয় প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে কোনও বারই খালি হাতে ফেরেনি সে। ২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে ট্র্যাডিশনালে সোনা ও আর্টিস্টিকে ব্রোঞ্জ
জিতেছিল সৃজা।

তবে মেয়ে প্রতি বার আন্তর্জাতিকে সুযোগ করে নিলেও যাওয়া সম্ভব হয় না বলে জানালেন সৃজার মা নবনীতা। দুই মেয়েকে নিয়ে অভাবের সংসারে কী ভাবে ছোট মেয়ে ‌সৃজা এগিয়ে যাবে সেই ভবনা বাবা সুশান্তেরও। তিনি পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান।

নবনীতা গৃহবধূ। তিনি জানান, ২০১৯ সালে এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের সৌজন্যে রাজ্য সরকার পুরো খরচ বহন করেছিল। তাই অত দূর যাওয়া সম্ভব হয়েছিল। নবনীতা বলেন, “আর্থিক সঙ্কটে মাঝে মধ্যে ভেঙে পড়ি। তবে মেয়র রাম চক্রবর্তী ও স্থানীয় পুর-সদস্য (কাউন্সিলর) পীযূষ বিশ্বাস প্রতি বারই সাহস যোগান। তাঁদের আশ্বাসে ফের মেয়েকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার
সাহস পাই।”

শেওড়াফুলি সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতনের বালিকা বিভাগে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ঐন্দ্রিলা তিন বছর বয়স থেকে যোগাভ্যাস করছে। স্কুল, জেলা, রাজ্যের হয়ে একাধিক প্রতিযোগিতায় পদক পেয়েছে সে। গত বছর প্রথম বার পঞ্জাবে অনুষ্ঠিত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে একটি ইভেন্টে সোনা জিতেছিল ঐন্দ্রিলা।

তার বাবা-মা জানান, পরবর্তীকালে দেশের হয়ে মেয়ে সোনা জিতবে, এটাই চান সকলে। পিয়ারাপুর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতি খাদ্য ও সরবরাহ কর্মাধ্যক্ষ বিকাশ দাস ও পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নিমাই মণ্ডল ঐন্দ্রিলার বাড়িতে এসে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গিয়েছেন।

সৃজার লক্ষ্য এশিয়ান গেমস। সেই লক্ষেই পড়াশোনার পাশাপাশি যোগার প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে সে। তার কথায়, “যোগা থেকেই ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে পরিবারের পাশে থাকতে চাই।” ঐন্দ্রিলার কথায়, “খুব ভাল লাগছে। যদি তিনটিতেই সোনা পেতাম, আরও ভাল লাগত। আগামী দিনে আমার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক আসরে যোগদান করা।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Hooghly Women

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy