E-Paper

অবাঞ্ছিতদের ভিড় লেগেই থাকে শরৎচন্দ্র মেডিক্যালে

আরজি করে রাতের ‘ডিউটি’র ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার সময় দুষ্কৃতীর খপ্পরে পড়েন এক মহিলা চিকিৎসক। তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৪ ১০:০৭
উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ।

উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ। ছবি: সুব্রত জানা।

তিন বছর ধরে পঠনপাঠন চালু হয়ে গেলেও উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণকাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। হাসপাতালে পুলিশের নজরদারি রয়েছে। রয়েছেন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীও। তা সত্ত্বেও হাসপাতাল চত্বরে অবাঞ্ছিত লোকজনের ভিড় লেগে থাকে বলে অভিযোগ। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বার এই হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হবে বলে জানালেন এখানকার রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যাম তথা উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজি।

নির্মল বলেন, ‘‘এমনিতেই রোগী কল্যাণ সমিতির প্রতিটি বৈঠকেই হাসপাতালের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়। আরজি করের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরও কয়েকটি দিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অবাঞ্ছিতদের ভিড় অনেকটাই হটানো হয়েছে। দালালরাজও নির্মূল করার চেষ্টা চলছে।’’

আরজি করে রাতের ‘ডিউটি’র ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার সময় দুষ্কৃতীর খপ্পরে পড়েন এক মহিলা চিকিৎসক। তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এত রাতে হাসপাতালের চার তলায় ওই মহিলা চিকিৎসকের কাছ পর্যন্ত বিনা বাধায় কী ভাবে পৌঁছল দুষ্কৃতীরা?

উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে রাতে যে মহিলা চিকিৎসকেরা ডিউটি করেন তাঁদের জন্য বিশ্রামকক্ষ আছে। সেখানে নিরাপত্তায় থাকেন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা। তবে, সেখানে এখনও পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা নেই। নির্মল জানান, ওই বিশ্রাম কক্ষের নিরাপত্তার দিকটি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে বিশ্রামকক্ষের সামনে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।’

উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পঠনপাঠন চালু হয় ২০২২ সালে। সেই অর্থে কোনও পড়ুয়া এখনও পর্যন্ত চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত নন। কিছু ছাত্রছাত্রী হাসপাতালেই অস্থায়ী ছাত্রাবাসে থাকেন। সেখানে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় অনেকে আশপাশের ভাড়াবাড়িতেও থাকেন। হাসপাতালে দু’টি দশতলা ভবন তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হয়ে গেলে পড়ুয়াদের জন্য একটি ভবনে ছাত্রাবাস করে দেওয়া হবে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।

আপাতত হাসপাতাল চত্বরে যে অস্থায়ী ছাত্রাবাস আছে, তার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা আছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের দাবি। স্থায়ী পুলিশ প্রহরা যেমন আছে, তেমনই পুলিশের টহলও চলে। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া বলেন, ‘‘শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ২৪ ঘণ্টা পুলিশের নজরদারির আওতায় থাকে। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে উলুবেড়িয়া থানার আধিকারিক থাকেন। নিরাপত্তা নিয়ে নিয়মিত আলোচনা হয়।’’

রোগীদের পরিজন এবং চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, হাসপাতাল চত্বর তো বটেই, ভিতরেও অবাঞ্ছিত লোকদের ভিড় লেগে থাকে। তাঁদের অধিকাংশই বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের দালাল। তাঁরা হাসপাতালের বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থার তোয়াক্কাই করেন না। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, অবাঞ্ছিতদের হাসপাতালে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ নিয়ে যদি দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে কোনও অপরাধমূলক কাজ করে, তা যে রোধ করা যাবে না আরজি করের ঘটনাই তার প্রমাণ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Uluberia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy