E-Paper

পুরোহিতের দরকার পড়ে না হোগলা দেবীর আরাধনায়

জনশ্রুতি, বলাগড়ের গঙ্গা পাড়ের চরকৃষ্ণবাটা এলাকায় এক সময় হোগলা বন ছিল। এলাকার বাসিন্দা কালীচরণ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির দাবি ছিল, হোগলাদেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন তিনি।

বিশ্বজিৎ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৬
হোগলা দেবীর মন্দির।

হোগলা দেবীর মন্দির। নিজস্ব চিত্র।

অগ্রহায়ণ মাসের পূর্ণিমার পরের প্রথম মঙ্গলবার পাটকাঠির আলো জেলে চরকৃষ্ণবাটী গ্রামের মানুষ আরাধনা করেন হোগলা দেবীর। পুরোহিতহীন এই পুজোয় তথাকথিত অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষ নিজের ভাষায় মনোবাসনা জানান। প্রায় একশো বছর ধরে চলছে এই প্রথা।

জনশ্রুতি, বলাগড়ের গঙ্গা পাড়ের চরকৃষ্ণবাটা এলাকায় এক সময় হোগলা বন ছিল। এলাকার বাসিন্দা কালীচরণ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির দাবি ছিল, হোগলাদেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী গোলাপসুন্দরীকে সে কথা জানান তিনি। তারপরে দুটি’ খণ্ড শিলাকে নিরাকার দেবী হিসেবে পুজো করতে শুরু করেন মণ্ডল দম্পতি। শুরুতে হোগলা বনে একটি হোগলা পাতার ছাউনি দেওয়া ঘর করে সেখানেই ফুল, গঙ্গাজল দিয়ে পুজো শুরু হয়। ধীরে ধীরে ভক্ত বাড়তে থাকে।

এখন কংক্রিটের বড় মন্দিরে চলে আরাধনা। পুজোর বাহার ও বহর বেড়েছে। পুজোকে কেন্দ্র করে বসে মেলা। কালীচরণের উত্তরসূরি সাধন মণ্ডলের কথায়, ‘‘পুরোহিতহীন এই পুজোয় গ্রামবাসীরা নিজেরাই নিজের পুজো দেন। পুজোর দিন মন্দিরে বৈদ্যুতিক আলো থাকে না। পাটকাঠি জড়ো করে মশাল তৈরি করে তার আলোতে চলে আরাধনা।’’

প্রাচীন এই পুজো প্রসঙ্গে বলাগড় হেরিটেজ কমিটির সভাপতি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের ভক্তি বিনিময় হয় নিজের চিন্তায়, নিজের ভাষায়। মাধ্যম হিসেবে প্রয়োজন হয় না পুরোহিতের। এই পুজো ভারতবর্ষের লোকসমাজের মৌলিকতাকে এখনও ধারণ করে চলেছে। এ পুজো বলাগড়ের
অন্যতম ঐতিহ্য।’’

পুজো কমিটির কর্মকর্তা সুমন মণ্ডল জানান, পুজো মিটে যাওযার পরের তিন দিন মেলা বসে। থাকে খিচুড়ি ভোগের ব্যবস্থা। নদিয়া,
পূর্ব বর্ধমান থেকেও অনেকে পুজো দিতে আসেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Balagarh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy