Advertisement
E-Paper

বাঁধ ভেঙে প্লাবিত গ্রাম, দুর্গত লক্ষাধিক মানুষ

সেচ দফতরের বিরুদ্ধে বাঁধ মেরামতির কাজে গাফিলতির অভিযোগ তুলে একদল মানুষ উলুবেড়িয়ায় সেচ দফতরের কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২১ ০৬:৪২
গাদিয়াড়ায় জলোচ্ছ্বাসে ভাঙছে বাঁধ, পড়ে যাচ্ছে গাছ।

গাদিয়াড়ায় জলোচ্ছ্বাসে ভাঙছে বাঁধ, পড়ে যাচ্ছে গাছ। ছবি: সুব্রত জানা।

‘ইয়াস’ মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল প্রশাসন। ঝড়ের তাণ্ডব দেখা না গেলেও হুগলি ও রূপনারায়ণে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে প্রাবিত হয়েছে শ্যামপুর ১ এবং ২ ব্লকের ১৫টি পঞ্চায়েতের অন্তত ৬০টি গ্রাম। প্রশাসনের প্রাথমিক রিপোর্ট, দুই ব্লকের লক্ষাধিক মানুষ দুর্যোগের কবলে পড়েছেন। দুর্গতদের বিভিন্ন স্কুলবাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেওয়া হয়েছে শুকনো ও রান্না করা খাবার।

বুধবার দুপুরে আছড়ে পড়ার কথা ছিল ‘ইয়াস’-এর। মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল দুই ব্লকের প্রশাসন। প্রবল ঝড়ের আশঙ্কা থাকলেও তা হয়নি। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। তবে, বিপদ আসে অন্য দিক থেকে।

পূর্ণিমার ভরা কটাল এবং ঝোড়ো হাওয়ার কারণে হুগলি ও রূপনারায়ণে জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়। শ্যামপুর ১ ব্লকের ধানধালি থেকে গাদিয়াড়া পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশের কোথাও কোথাও নদীবাঁধ উপচে গ্রামে জল ঢোকে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়। গাদিয়াড়ায় বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামত করেছিল এক ঠিকা সংস্থা। সেখানেও বাঁধ উপচে গ্রামে জল ঢোকে। গাদিয়াড়া জেটিঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই প্রথম তাঁরা হুগলি নদীতে এমন জলোচ্ছ্বাস দেখলেন।

শ্যামপুর ২ ব্লকের চিত্রটিও ছিল মোটের উপরে একই। রূপনারায়ণের জলে প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। নাকোল থেকে ডিহিমণ্ডলঘাট পর্যন্ত নদীবাঁধের প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশের বিভিন্ন জায়গায় জল উপচে গ্রামে ঢোকে। ভেঙে যায় বাঁধ। স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কমবেশি ১৬ জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে।

দু’টি ব্লকের কয়েকটি স্কুলবাড়িতে ত্রাণশিবির খোলা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছিল প্রশাসন। তবে, এ দিন ঠিক কতগুলি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে, তার হিসাব প্রশাসন দিতে পারেনি। শ্যামপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুলফিকার মোল্লা বলেন ‘অসংখ্য ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে।’’ একই কথা বলেন বিডিও (শ্যামপুর ১) সঞ্চয়ন পান।

এ দিন শ্যামপুরে আসেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য ও উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক তথা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরিমন্ত্রী পুলক রায়। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজ ঠিক ভাবেই চলছে। সবাইকে শুকনো ও রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।’’

শ্যামপুর ছাড়াও উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়া ও সাঁকরাইলে হুগলি নদীর বাধ ভেঙেছে বলে খবর। প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। রূপনারায়ণে জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাগনানের বেনাপুর, ওড়ফুলি, কাটাপুকুর, গোবিন্দপুর এবং সামতাবেড়ের মতো কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের উদ্ধারকাজের তদারকি করেন বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন।

এ দিকে, সেচ দফতরের বিরুদ্ধে বাঁধ মেরামতির কাজে গাফিলতির অভিযোগ তুলে একদল মানুষ উলুবেড়িয়ায় সেচ দফতরের কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান। আমতার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র বলেন, ‘‘সেচ দফতর আগেই মেরামতির কাজ সেরে রাখলে এই পরিমাণ ক্ষতি হত না’’ যদিও সেচ দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, এমন জলোচ্ছ্বাস আগে কখনও দেখা যায়নি। সেই কারণেই এই বিপত্তি ঘটেছে। তবে, বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিকেরা।

Cyclone Yaas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy