Advertisement
০২ মে ২০২৪
Madhyamik Result 2023

মেধা-তালিকায় দুই জেলার নয়

মেধা তালিকায় সপ্তমে রয়েছে দু’জেলার তিন জন। তার মধ্যে হাওড়ার বাগনান আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুস্মিতা সাঁতরার প্রাপ্তি ৬৮৬।

মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর। শুক্রবার বাণীবন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। ছবি: সুব্রত জানা

মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর। শুক্রবার বাণীবন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। ছবি: সুব্রত জানা Sourced by the ABP

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৩ ০৮:৪০
Share: Save:

চলতি বছরের মাধ্যমিকের কৃতীদের তালিকায় জায়গা করে নিল হাওড়া ও হুগলি জেলার ৯ পরীক্ষার্থী। সপ্তম থেকে দশমের মধ্যে রয়েছে তারা। পাশের হারে হাওড়াকে (৮৩.৫৯ %) টপকে গিয়েছে হুগলি (৮৪.৬৩%)। কৃতীদের অধিকাংশেরই পছন্দ বিজ্ঞান বিভাগ। বেশির ভাগই চেয়েছে চিকিৎসক হতে।

মেধা তালিকায় সপ্তমে রয়েছে দু’জেলার তিন জন। তার মধ্যে হাওড়ার বাগনান আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুস্মিতা সাঁতরার প্রাপ্তি ৬৮৬। বাগনান শহরের বাসিন্দা অনুস্মিতা পঞ্চম শ্রেণি থেকে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রী। বরাবর সে ক্লাসে প্রথম হয়। তার বাবা নবকুমার সাঁতরা ব্যবসায়ী। মা মৌসুমী গৃহবধূ। অনুস্মিতা জানিয়েছে, নয় গৃহশিক্ষকের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের থেকেও সে সাহায্য পেয়েছে। বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবে অনুস্মিতা। তার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার।

হুগলির মাহেশ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের জিষ্ণু ঘোষের ঝুলিতেও রয়েছে ৬৮৬ নম্বর। নিজের ফলে সে সন্তুষ্ট। জিষ্ণুর বাড়ি কোন্নগর নবগ্রামে। বাবা প্রণব ঘোষ ওই বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষক। মা লিপিকা গৃহবধূ। জিষ্ণু জানায়, বাড়িতে পড়ার জন্য ধরাবাঁধা কোনও সময় ছিল না। ভাল ফলের জন্য সে কৃতিত্ব দিতে চায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। একই কথা বলেন জিষ্ণুর বাবা। ক্লাসের বাইরেও শিক্ষকেরা তাকে আলাদা করে পড়া দেখিয়েছে বলে জিষ্ণু জানিয়েছে। প্রণববাবু ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক। এই বিষয়ে বাড়িতে বাবার সাহায্য নিয়েছে সে। একাদশ শ্রেণিতে জিষ্ণু বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হতে চায় মাহেশ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ে। জীবন বিজ্ঞান তার প্রিয় বিষয়। ভবিষ্যতে তার স্বপ্ন চিকিৎসক হবে। পড়াশোনার বাইরে কবিতা পাঠ করতে ভালবাসে জিষ্ণু। ভাল লাগে ছবি আঁকতে। টেলিভিশনে খেলা দেখাও রয়েছে তার সময় কাটানোর তালিকায়। এখন চুটিয়ে আইপিএল দেখছে মহেন্দ্র সিংহ ধো‌নির এই ভক্ত। প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের জন্যই আইপিএলে তার প্রিয় দল চেন্নাই সুপার কিংস।

আরামবাগ বয়েজ় হাইস্কুল থেকে সপ্তম স্থান দখল করা প্রান্তিক গঙ্গোপাধ্যায় ভবিষ্যতে অঙ্ক নিয়ে পড়তে চায়। শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওলাইবিবি তলার বাসিন্দা প্রান্তিক বলে, “চারটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল। দৈনিক গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা পড়েছি। উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল ধরে রাখার প্রস্তুতি চালাচ্ছি।” বাবা ব্যবসায়ী অনির্বাণ বলেন, “ছেলে বরাবরাই পড়াশোনায় ভাল। মেধা তালিকায় উপরের দিকে নাম থাকবে বলে আমাদের প্রত্যাশা ছিল। সেটা মিটেছে।” বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশচন্দ্র রায় বলেন, “মেধা তালিকায় আমাদের ধারাবাহিকতা অটুট রাখল প্রান্তিক। তার বিশেষ গুণ শিক্ষক শিক্ষিকাদের অত্যন্ত বাধ্য, ব্যবহার মার্জিত।”

মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় অষ্টমে রয়েছে গোঘাটের কামারপুকুর রামকৃষ্ণ বহুমুখী বিদ্যালয়ের রাজদীপ শাসমল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫। রাজদীপের বাড়ি পুরশুড়ার কুলবাতপুর। তার বাবা পুরশুড়ারই এক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। রাজদীপ বলে, ‘‘ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাই। সেই মতোই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ ইতিহাস বাদে সব বিষয়ে তার গৃহশিক্ষক ছিল। ফুটবল তার প্রিয় খেলা। প্রিয় খাবার বিরিয়ানি। কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পরিচালনাধীন এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক স্বামী কল্যাণেশানন্দ বলেন, ‘‘রাজদীপের প্রধান গুণ ও পড়াশোনায় অত্যন্ত যত্নশীল এবং আগ্রহী। তার ভাল ফল নিয়ে আমরা আশাবাদী ছিলাম।’’

নবম স্থানে রয়েছে উলুবেড়িয়া হাই স্কুলের দ্বৈপায়ন মান্না। সে পেয়েছে ৬৮৪। তার বাবা-মা দু’জনেই গণিতের শিক্ষক। দ্বৈপায়নও চায় অঙ্ক নিয়েই গবেষণা করতে। তার চার জন গৃহ শিক্ষক ছিল। পড়াশোনা ছাড়া দ্বৈপায়ন গল্পের বই পড়তে ভালবাসে। ইতিহাস ও সাহিত্যও তার পছন্দের। তবে এই ফলে মন ভরেনি তার। দ্বৈপায়ন বলেন, ‘‘আরও ভাল ফলের আশা ছিল। উচ্চ মাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করার চেষ্টা করব।’’

নবমে রয়েছে হুগলির মাহেশ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্র শুভ্র সাধুখাঁও। নালিকুল স্টেশন বাজারের বাসিন্দা সে। চারজন গৃহ শিক্ষকের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনি সে। বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় সে।

মেধা তালিকার দশমে রয়েছে হাওড়ার দু’জন। তাদের প্রাপ্তি ৬৮৩। জয়নগর পল্লিশ্রী বিদ্যানিকেতনের ছাত্রী নম্রতা কোলের ছিল পাঁচ জন গৃহশিক্ষক। তার বাবা ব্যবসায়ী ও মা গৃহবধূ। নম্রতার বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছা। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতেচায় সে। পড়াশোনা ছাড়া তার আঁকার শখ আছে।

উদয়নারায়ণপুর গড় ভবানীপুর ঊষারানি করাতি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী শময়িতা দাসও মেধাতালিকায় থাকতে পেরে খুশি। পাঁচ জন গৃহশিক্ষক ছিল তার। শময়িতার বাবা ও মা দু’জনেই শিক্ষক। বিজ্ঞাননিয়ে পড়ার ইচ্ছা শময়িতার। ভবিষ্যতে সে চিকিৎসক হতে চায়। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকা ও আবৃত্তি তার শখ।

মাহেশ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের অয়নদীপ সেনগুপ্তও রয়েছে দশম স্থানে। কোন্নগরের এই ছাত্র জানিয়েছে, বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে তার লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik Result 2023 Madhyamik 2023 Merit List
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE