আবাসনে ঢোকার রাস্তায় গত দু’দিন ধরে জমে ছিল জল। তার উপরে আবাসনের লোহার গেটের সঙ্গে কোনও ভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল মিটার বক্সের একটি বিদ্যুৎবাহী তার। যার ফলে লোহার গেটটিও বিদ্যুদয়িত হয়ে গিয়েছিল। আর সেই গেটে হাত দিতেই তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের।
মঙ্গলবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার রামরাজাতলার কাছে রামচরণ শেঠ রোডে। মৃতের নাম বিজয় দাস ওরফে নানকি (৪০)। খবর পেয়ে সিইএসসি-র কর্মীরা এসে ওই আবাসনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় দিনমজুর বিজয় এ দিন তিন সঙ্গীকে নিয়ে ওই আবাসনের একটি ফ্ল্যাট থেকে জিনিসপত্র নামাচ্ছিলেন। আবাসনে ঢোকার রাস্তা তখনও জলমগ্ন ছিল। জিনিসপত্র বার করার সময়ে আবাসনের লোহার গেটে হাত দিয়ে ফেলেন বিজয়। পুলিশ জানায়, গ্রিল দেওয়া গেটের সঙ্গে আবাসনের মিটার বক্সের একটি বিদ্যুৎবাহী তার কোনও ভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল। যে কারণে গেটটিও বিদ্যুদয়িত হয়ে যায়। বিজয় গেটে হাত ছোঁয়ানো মাত্র ছিটকে পড়েন।
ঘটনার পরেই বিজয়ের তিন সঙ্গী এবং আবাসনের বাসিন্দারা বুঝতে পারেন, তিনি তড়িদাহত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা মিটার বক্সের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন অন্য আবাসিকেরা। বিজয়কে প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে, পরে সেখান থেকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ বিজয়ের দেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। জানা গিয়েছে, আদতে বিহারের বাসিন্দা বিজয় রামচরণ শেঠ রোডের কাছেই কলাবাগানে একটি আলমারির কারখানায় বাবার সঙ্গে থাকতেন ও মালবাহী ভ্যান চালাতেন।
ওই আবাসনের এক বাসিন্দা ঝুমা দাস ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘সোমবার রাতে ভারী বৃষ্টির জেরে আবাসনের একতলায় জল জমে গিয়েছিল। সেই জমা জলের জন্যই মিটার বক্সের খোলা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। এখানে অল্প বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান জল জমে যায়। প্রশাসন জমা জল দ্রুত সরাতে কোনও ব্যবস্থা নেয় না।’’ হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই জল দাঁড়িয়ে ছিল। টানা বৃষ্টি চললে জল তো একটু দাঁড়াবেই। পরে জল নেমে গিয়েছিল।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)