Advertisement
E-Paper

বাড়তি দাম নেওয়া যাবে না, বাজারে হানা

প্রতিদিন বাজার খোলা থাকবে। আনাজের যথেষ্ট জোগান আছে। দুশ্চিন্তার কারণ নেই। ‘কাঁচাসব্জি বাজার সমিতি’র তরফে মুকুল সাহাআলু-চালের কৃত্রিম অভাব তৈরি করে দাম যাতে না বাড়ানো হয়, তা দেখতে শনিবার হাওড়া গ্রামীণ এলাকা জুড়ে অভিযান চালায় ইবি এবং পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৪:০৪
সরেজমিনে: শেওড়াফুলি হাটে পুলিশের হানা। শনিবার। —নিজস্ব িচত্র

সরেজমিনে: শেওড়াফুলি হাটে পুলিশের হানা। শনিবার। —নিজস্ব িচত্র

করোনা-জুজুতে অনেকেই বাড়িতে আলু-সহ কাঁচা আনাজ বেশি করে মজুত করে রাখতে চাইছেন। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামও হাঁকছেন। আজ, রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘জনতা কার্ফু’র নিদান দিয়েছেন করোনা মোকাবিলায়। তার আগে আনাজ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসের বাড়তি দাম রুখতে শনিবার হাওড়া ও হুগলির বাজারে অভিযান চালাল পুলিশ। চড়া দামে চাল-আলু বিক্রির অভিযোগে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ইবি)। একই কারণে চুঁচুড়ায় চন্দন মিত্র নামে এক মাস্ক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছেন।

আলু-চালের কৃত্রিম অভাব তৈরি করে দাম যাতে না বাড়ানো হয়, তা দেখতে শনিবার হাওড়া গ্রামীণ এলাকা জুড়ে অভিযান চালায় ইবি এবং পুলিশ। উলুবেড়িয়ার যদুরবেড়িয়ায় এক ব্যবসায়ীর চাল ও আলুর গুদামে হানা দেন ইবি অফিসারেরা। চড়া দামে চাল-আলু বিক্রির অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। গুদামের নথিপত্র নিয়ে যান ইবি আধিকারিকরা। রানিহাটি, উলুবেড়িয়া, বাগনানেও বাজার এবং চাল-আলুর গুদামে অভিযান চলে। ব্যবসায়ীদের বলে দেওয়া হয়, বাজারে কৃত্রিম অভাব তৈরি করে জিনিসের দাম বাড়ানো চলবে না। ক্রেতাদের বলা হয়, বেচাল দেখলে পুলিশে খবর দিতে।

শুক্রবার থেকেই চাল ও আলু কেনার হিড়িক পড়ে। ক্রেতাদের অনেকের বক্তব্য, রবিবার দোকান-বাজার বন্ধ থাকবে। তাই চাল-আলু বাড়িতে মজুত করে রাখছেন তাঁরা। অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে গত তিন দিনে আলুর দাম কিলোপ্রতি ১৪ টাকা থেকে বেড়ে ২০ টাকা হয়েছে। বাগনানে দেখা গেল, কয়েক জন ক্রেতা ৫০ কেজির আলুর বস্তা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, আলুর দাম আরও বাড়বে। তাই বেশি করে কিনে রাখছেন। একই অবস্থা চালের ক্ষেত্রে। অনেক জায়গায় খোলা বাজারে আলু উধাও হয়ে যায়। শ্যামপুরে আলুর বস্তা নিয়ে গুদামে ক্রেতাদের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়।

হুগলির বিভিন্ন শহরে চন্দ্রমুখী আলু কেজিপ্রতি ২৮-৩০ টাকা এবং জ্যোতি আলু ২০-২২ টাকায় বিকিয়েছে। রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খোলা বাজারে জ্যোতি আলু ১৬ এবং চন্দ্রমুখী আলুর দাম ১৯ টাকা কেজি। পরিবহণ খরচের দরুণ দু’এক টাকা বাড়তে পারে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই ২৮ থেকে ৩০ টাকা দাম নেওয়া উচিত নয়। আমরা রাজ্য সরকারকে বলব ব্যবস্থা নিতে।’’

এই পরিস্থিতি রুখতে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ এ দিন বিভিন্ন বাজারে হানা দেয়। শেওড়াফুলি হাট রাজ্যে আনাজের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার। শনিবার সকালে সেখানে হানা দেয় পুলিশ। ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। মানুষের মধ্যে গুজব রটে গিয়েছিল, করোনার জন্য শেওড়াফুলি হাট বন্ধ থাকবে। গুজব রুখতে ‘শেওড়ফুলি কাঁচাসব্জি বাজার সমিতি’ এবং ‘গোলদার ব্যবসায়ী সমিতি’র তরফ থেকে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার বন্ধের পরিস্থিতি হয়নি। ‘কাঁচাসব্জি বাজার সমিতি’র তরফে মুকুল সাহা বলেন, ‘‘প্রতিদিন বাজার খোলা থাকবে৷ আনাজের যথেষ্ট জোগান আছে। দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’’

আরামবাগ, উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগর-সহ জেলার বিভিন্ন বাজারেই এ দিন পুলিশি অভিযান চলে। খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস নিয়েও ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। স্যানিটাইজ়ারের কালোবাজারি রুখতে ওষুধের দোকানেও হানা দেয় পুলিশ। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, পরিস্থিতির সুযোগ না নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের বার বার সতর্ক করা হচ্ছে।

Coronavirus Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy