Advertisement
E-Paper

মিষ্টি হাতাচ্ছে পুলিশ! অভিযোগ ব্যবসায়ীর

লকডাউনের সময় চন্দননগরের যুগিপুকুর মোড়ের একটি মিষ্টির দোকানের ভিয়েন-ঘরে হানা দিয়ে এমন কাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে চন্দননগর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে।

কেদারনাথ ঘোষ ও প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০৭:২৯
এই সিসিটিভি ফুটেজই পুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন অভিযোগকারী। আনন্দবাজার এই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি।

এই সিসিটিভি ফুটেজই পুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন অভিযোগকারী। আনন্দবাজার এই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি।

মিষ্টির দোকানের ভিয়েন-ঘরে (যেখানে মিষ্টি তৈরি হয়) ঢুকে ডেকচি থেকে টপাটপ পান্তুয়া তুলে নিচ্ছেন উর্দিধারী! ট্রে ফাঁকা করে প্যাকেটে ভরা হচ্ছে সন্দেশ, ছানা!

লকডাউনের সময় চন্দননগরের যুগিপুকুর মোড়ের একটি মিষ্টির দোকানের ভিয়েন-ঘরে হানা দিয়ে এমন কাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে চন্দননগর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে চন্দননগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের লিখিত অভিযোগ করেন দোকান-মালিক খোকন সাহা। তাঁর দাবি, পুলিশের ‘কীর্তি’ ধরা আছে সিসিক্যামেরার ফুটেজে। সেই ফুটেজ আনন্দবাজারের হাতে এসেছে। আনন্দবাজার অবশ্য ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি। বিষয়টি জানাজানি হতে শোরগোল পড়েছে ব্যবসায়ী মহলে। কমিশনারেটের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়পত্র দেওয়ায় গত ৩১ মার্চ থেকে চার ঘণ্টা করে মিষ্টির দোকা‌ন খুলছে। খোকন জানান, মুখ্যমন্ত্রী ছাড়পত্র দেওয়ায় ৩০ মার্চ রাতে দোকান লাগোয়া ভিয়েন-ঘরে মিষ্টি তৈরি করছিলেন দুই কর্মী। দোকান বন্ধই ছিল। রাত পৌনে ন’টা নাগাদ চন্দননগর থানার কয়েকজন পুলিশকর্মী সেখানে ঢোকেন।

আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় ৩ টাস্ক ফোর্স রাজ্যে

খোকনের অভিযোগ, ‘‘ক্যারিব্যাগ বের করে পুলিশকর্মীরা তাতে মিষ্টি ভরতে থাকেন। ঘি, ঠান্ডা পানীয়ের বোতলও নেন। বাধা দিতে গেলে এক কর্মীকে মারধর করা হয়। ওই সব মিষ্টি, ওজন-যন্ত্র এবং এক কর্মীকে আটক করে নিয়ে যান ওঁরা। গোটা ঘটনা সিসিটিভি-তে ধরা পড়ে।’’

খোকনের দাবি, বিষয়টি জেনে রাতেই তিনি থানায় যান। তখন আটক কর্মীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁকে দিয়ে লকডাউন উপেক্ষা করে দোকান খোলা হয়েছিল বলে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়, এমন অভিযোগও তুলেছেন খোকন। গোটা বিষয়টি জানিয়ে মঙ্গলবার ডিসি (চন্দননগর) বিশপ সরকারের কাছে খোকন লিখিত অভিযোগ করেন।

এক সপ্তাহ পরে অভিযোগ কেন?

ওই ব্যবসায়ীর দাবি, সিসিটিভি-র ফুটেজ বের করার কৌশল তাঁর জানা ছিল না। সোমবার রাতে লোক ডেকে ওই ফুটেজ তিনি বের করেন। এর পরেই অভিযোগ করা হয়।

এ নিয়ে চেষ্টা করেও চন্দননগর থানার প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ডিসি (চন্দননগর) বিশপ সরকারের দাবি, ওই দোকানের পিছনের দরজা দিয়ে মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। ডিসি বলেন, ‘‘দোকানের মালিক অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। দোকানের ভিতরে ঠিক কী হয়েছে, থানার আইসি-কে তা দেখতে বলা হয়েছে।’’

ঘটনার কথা জেনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অন্য মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, সাধারণত রাতেই মিষ্টি তৈরি হয়। পরের দিন বিক্রি হয়। লকডাউন চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী দোকান খুলে রাখার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। কিন্তু কোন সময়ে মিষ্টি তৈরি হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছুই বলা হয়নি। ফলে, বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গিয়েছে। বহু ব্যবসায়ীই অভ্যাস অনুযায়ী রাতে মিষ্টি তৈরি করছেন।

‘জেলা মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতি’র এক কর্তা বলেন, ‘‘কেউ যদি লকডাউনের নিয়ম না মানেন, তা হলে পুলিশ আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিতেই পারে। কিন্তু পুলিশ মিষ্টি নিয়ে থাকলে ঠিক হয়নি। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ সংগঠনের অপর এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘কিছু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত সময় দোকান খোলা রাখছেন, এটা ঠিক। আমরা বার বার অনুরোধ করছি, সময় মানতে। কিন্তু তাঁরা শুনছেন না। এ ক্ষেত্রে পুলিশ ব্যবস্থা নিতেই পারে। কিন্তু মিষ্টি তুলে নিতে পারে না। এমনটা হলে থাক‌লে খুব খারাপ হয়েছে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy