Advertisement
E-Paper

যুবককে পুড়িয়ে খুন, ধৃত স্ত্রী ও তার প্রেমিক

নিহতের নাম লক্ষ্মী প্রামাণিক (৩৩)। তাঁকে খুনের অভিযোগে সোমবার সকালে গ্রেফতার করা হয় স্ত্রী ময়নাকে। ময়না খুনের কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০২:০৩
ডহরকুণ্ডু গ্রামের নিহত লক্ষ্মী প্রামাণিক। (ডানদিকে) ধৃত লক্ষ্মীর স্ত্রী ময়না প্রামাণিক।

ডহরকুণ্ডু গ্রামের নিহত লক্ষ্মী প্রামাণিক। (ডানদিকে) ধৃত লক্ষ্মীর স্ত্রী ময়না প্রামাণিক।

প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চেয়েছিল সে। সে জন্য স্বামীর মদে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁকে অচৈতন্য করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল আরামবাগের ডহরকুণ্ডু গ্রামের এক মহিলার বিরুদ্ধে। রবিবার রাতের ওই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলা দুই শিশুসন্তানের মা। যড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তার প্রেমিককেও।

পুলিশ জানায়, নিহতের নাম লক্ষ্মী প্রামাণিক (৩৩)। তাঁকে খুনের অভিযোগে সোমবার সকালে গ্রেফতার করা হয় স্ত্রী ময়নাকে। ময়না খুনের কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি। গৌরহাটির হাজরা পাড়ার বাসিন্দা, ময়নার প্রেমিক ঝন্টু দোলুইকেও ধরা হয়। ধৃতদের এ দিনই আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক দু’জনকেই ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

লক্ষ্মীর মা রেবতীদেবীই থানায় পুত্রবধূর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘বৌমার মনে যে এই ছিল বুঝিনি। রবিবার রাতে ও আমাকে ঠান্ডা পানীয় খেতে দেয়। সেটা খেয়ে আর হুঁশ ছিল না। সকালে পড়শিদের থেকে জানতে পারি ময়না আমার ছেলেকে পুড়িয়ে খুন করেছে। রবিবার রাতে ছেলে ঘরে মদ খাচ্ছিল জানতাম। মনে হয় তাতে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিল ময়না। যাতে জ্বালিয়ে দেওয়া সহজ হয়।’’

এখান থেেকই উদ্ধার হয় দেহ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কুড়ি আগে ময়না দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি যাদববাটী গ্রামে যাওয়ার নাম করে নিখোঁজ হয়। তাঁর স্বামী লক্ষ্মী চেন্নাইয়ে সোনার দোকানে কাজ করতেন। স্ত্রীর নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে তিনি ফিরে আসেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, স্ত্রী তার পুরনো প্রেমিক ঝন্টুর সঙ্গে হায়দরাবাদ চলে গিয়েছেন। ঝন্টুও সেখানে সোনার দোকানে কাজ করত। কিন্তু এ নিয়ে ঝন্টুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ময়নার বাপের বাড়ির লোকজনের অশান্তি হয়। তার জেরে ময়না ও ঝন্টু ফিরে আসে। শ্বশুরবাড়িতে ফিরে ময়না স্বামী ও সংসারের সব কিছু দেখভাল শুরু করে।

রবিবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে লক্ষ্মীর মা রেবতীদেবী বাড়ির দাওয়ায় শুয়ে পড়েন। ময়না তাঁকে এক গ্লাস ঠান্ডা পানীয় খেতে দিয়েছিল। সেটা খাওয়ার পরে তাঁর আর হুঁশ ছিল না বলে রেবতীদেবী জানিয়েছেন। ওই রাতে লক্ষ্মীর দু’বছরের ছেলে বাড়িতে থাকলেও মেয়ে ছিল মামার বাড়িতে। সোমবার সকালে পড়শিদের চিৎকারে ঘুম ভেঙে রেবতীদেবী দেখেন, ছেলের দগ্ধ দেহ ঘরে পড়ে রয়েছে। তার আগে ময়নার চিৎকারে পড়শিরা ওই ঘরে গিয়ে দেখেন, খাটের তলায় কাঁথা মুড়ি দেওয়া অবস্থায় লক্ষ্মীর দেহ তখনও জ্বলছে। জল ঢেলে নিভিয়ে দেখা যায় তাঁর হাত-পা কাপড় ও গামছা দিয়ে বাঁধা। মুখেও গামছা গোঁজা।

রেবতীদেবী বলেন, ‘‘ময়না হায়দারবাদ থেকে ফিরে এসে ওর কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করছিল। ভাল ব্যবহারও করছিল। ওকে ক্ষমা করে দিয়েছিলাম। এখন পরিষ্কার হয়ে গেল, আমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ও আমার ছেলেকে পুড়িয়ে মারল।”

Crime Murder Police Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy