Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Chandannagar

সৌজন্যে হ্যাম রেডিয়ো, বাড়ির পথে মহিলা

মঙ্গলবার গুজরাত থেকে আত্মীয়েরা এসে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন।

খুশি: পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ভানিতাবেন। ছবি: তাপস ঘোষ

খুশি: পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ভানিতাবেন। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৫
Share: Save:

কয়েক দিন ধরেই চন্দননগরের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছিল এক বৃদ্ধাকে। শনিবার তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় প্রশাসন। আর মঙ্গলবার গুজরাত থেকে আত্মীয়েরা এসে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন। এই মিলন-পর্বের সৌজন্যে রইল— হ্যাম রেডিয়ো।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলাকে কখনও চন্দননগরের বারাসত, কখনও বাগবাজার এলাকায় রাস্তার ধারে দেখা যাচ্ছিল। তাঁর কথা ভাল করে বোঝা যেত না। নিজের নামও বলতে পারেননি। বাগবাজার এলাকার অনেকেই জানান, কিছু জিজ্ঞাসা করলে মহিলা শুধু বলতেন, ‘‘হামরা মুলুক বহুত দূর। ম্যায় উধার নেহি জাউঙ্গি।’’ এলাকার মানুষ মহিলাকে খাবার, পোশাক দিয়েছেন। দিন কয়েক আগে স্থানীয় বাসিন্দারা সামাজিক মাধ্যমে তাঁর ছবি পোস্ট করেন। বিষয়টি হ্যাম রেডিয়োর সদস্যদের কানে পৌঁছয়। তাঁরা মহিলার আত্মীয়-স্বজনকে খুঁজে বের করতে উদ্যোগী হন। শনিবার হুগলি জেলা প্রশাসনের তরফে মহিলাকে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হ্যাম রেডিওর তরফে অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানান, এ সবের মধ্যেই তাঁদের সঙ্গে ওই মহিলার পরিবারের যোগাযোগ হয়। জানা যায়, মহিলার নাম ভানিতাবেন ধাবি বাচুভাই। বয়স ৭৮ বছর। বাড়ি গুজরাতের ভিরপুর থানা এলাকার রাজকোট মৌভিয়া গ্রামে। সেখানে তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে অম্বরীশরা যোগাযোগ করেন।

সোমবার বৃদ্ধার স্বামী ধাবি বাচুভাই, দুই মেয়ে মমতা ও রেখাবেন এবং জামাই চেমতি সোলাঙ্কি চন্দননগর হাসপাতালে আসেন। চন্দননগরের মহকুমাশাসক মৌমিতা সাহা এবং হ্যাম রেডিয়োর সদস্যরাও আসেন। বাড়ির লোকজনের হাতে ভানিতাবেনকে তুলে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে বৃদ্ধাকে নতুন পোশাক, রাহাখরচ দেওয়া হয়। হ্যাম রেডিওর সদস্যরা হাওড়া স্টেশনে গিয়ে তাঁদের ট্রেনে তুলে দেন।

পরিবারের লোকেরা জানান, ভানিতার মানসিক সমস্যা রয়েছে। চার মাস আগে তিনি মন্দিরে পুজো দিতে বেরিয়েছিলেন। আর ফেরেননি। বহু খোজাখুঁজি করা হয়। পুলিশে নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরি করা হয়। কিন্তু হদিস মেলেনি। শেষে হ্যাম রেডিয়োর সদস্যদের মাধ্যমে খোঁজ মেলে। বৃদ্ধার মেয়ে মমতা বলেন, ‘‘মা হারিয়ে যাওয়ায় খুব দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল আমাদের। আজ আমরা খুব খুশি।’’

চন্দননগরের বারাসত এলাকার বাসিন্দা গৌতম দাস, শৈবাল মোদকেরা বলেন, ‘‘ওই মহিলা পরিবারের লোকজনকে কাছে পাওয়ায় খুব ভাল লাগছে।’’ একই বক্তব্য মহকুমাশাসক মৌমিতা সাহারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandannagar Ham Radio Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE