Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Strike

কৃষকের পাশে দাঁড়াতে কারখানায় নেই শ্রমিক

সকাল ৮টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রিষড়ায় ট্রে‌ন অবরোধ করে বাম-কংগ্রেস। জিটি রোড অবরোধ করা হয় রিষড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটী-সহ নানা জায়গায়। বৈঁচী মোড়ে ট্রাক্টর নিয়ে অবরোধ করেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের কর্মী-সমর্থকেরা।

রিষড়ায় বাম-কংগ্রেসের রেল অবরোধ। ছবি: দীপঙ্কর দে।

রিষড়ায় বাম-কংগ্রেসের রেল অবরোধ। ছবি: দীপঙ্কর দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৩০
Share: Save:

বন্‌ধের সমর্থনে হুগলিতেও অবরোধ-বিক্ষোভ তো হলই, আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন হুগলির অনেক শ্রমিকও।

মঙ্গলবার সকালে বাস-শ্রমিকরা চুঁচুড়া বাস টার্মিনালে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। চন্দননগরের গোন্দলপাড়ার জুটমিলের শ্রমিকেরাও নৈতিক সমর্থন জানান। চন্দননগরেরই গর্জি এলাকায় দিল্লি রোডের ধারে একটি রাসায়নিক কারখানা লকডাউন-পর্বের পরেও বন্ধ ছিল মন্দার কারণে। প্রায় সাড়ে ৮ মাস পরে সোমবার ওই কারখানা ফের চালু হয়। ধর্মঘটের সমর্থনে মঙ্গলবার শ্রমিকরা কাজে যোগ দেননি।

স্থায়ী-ঠিকাকর্মী মিলিয়ে ওই কারখানায় প্রায় ৩০০ শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, ওই আইনে শুধু চাষি নন, শ্রমজীবী সব মানুষই ধাক্কা খাবেন। কার্তিক পাল নামে এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘দিল্লির ঠান্ডাকে পরোয়া না করে কৃষকরা যে আন্দোলন করছেন, তা আমাদেরও স্বার্থে। তাই, ওঁদের পাশে দাঁড়াতে কারখানায় যাইনি। গত ন’মাস আয় নেই। এক দিন আগে কারখানা খুলেছে। আজকের মজুরিও পাব না। সেটা মেনে নিয়েই প্রতিবাদ জানালাম।’’

প্রবীণ শ্রমিক নেতা, এআইইউটিইউসির সর্বভারতীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্য মনে করছেন, ‘কৃষক-শ্রমিকের এই ঐক্য’ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে নয়া মোড় আনবে। তিনি বলেন, ‘‘মোদী-সরকার শ্রমিক এবং কৃষক নিধনে নেমেছে কর্পোরেট মালিকদের স্বার্থে। তার বিরুদ্ধে কৃষকদের লড়াই দেশকে প্রেরণা জোগাচ্ছে। অনেক শ্রমিকই কাজে যোগ দেননি।’’

সকাল ৮টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রিষড়ায় ট্রে‌ন অবরোধ করে বাম-কংগ্রেস। জিটি রোড অবরোধ করা হয় রিষড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটী-সহ নানা জায়গায়। বৈঁচী মোড়ে ট্রাক্টর নিয়ে অবরোধ করেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের কর্মী-সমর্থকেরা। পান্ডুয়ার কলবাজারে জিটি রোডে দু’ঘণ্টা অবরোধ হয় সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে। দাদপুর ও মহেশ্বরপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দফায় দফায় অবরোধ চলে। তার জেরে অহল্যাবাই রোড, ১৭ ও ১৮ নম্বর রুট, তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটী রোডও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ব্যান্ডেলে অবরোধকারীদের দলীয় পতাকা কাঁধে ফুটবল খেলতে দেখা যায়। সিঙ্গুরে ওই আইনের প্রতিলিপি পোড়ানো হয়। বিভিন্ন জায়গায় ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল।

চুঁচুড়া, আরামবাগ প্রভৃতি জায়গায় অনেক দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় গাড়িও কম চলেছে। পান্ডুয়ার পোটবা, তিন্না-সহ বেশ কিছু এলাকায় চাষিরা মাঠে নামেননি। তাঁদের ক্ষোভ, ওই আইন বাতিল না-করলে তাঁরা বিপদে পড়বেন। তোরগ্রামের প্রান্তিক চাষি আনিসুল হকের আশঙ্কা, ‘‘বড় চাষিদের হয়তো কিছু হবে না, কিন্তু আমরা বিপদে পড়ব। এমন কালা আইন বাতিল করা হোক।’’

ওই আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে জেলার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান-বিক্ষোভ করে তৃণমূল। জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ জানান, বন্‌ধের সমর্থনে সিপিএমের তরফে জেলা জুড়ে একশোর বেশি জায়গায় অবরোধ এবং মিছিল করা হয়। কৃষকদের বড় অংশ রাস্তায় নামেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strike CPM Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE