Advertisement
২৬ মে ২০২৪
School Dropout

Dropout: স্কুলছুট রুখতে ঘরে ঘরে ইমামরা

অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সচেতন করছেন ইমাম, মুয়াজ্জিনরা।

প্রতীকি ছবি

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২১ ০৬:০৫
Share: Save:

শুক্রবার জুম্মার দিন। নমাজ শেষে ছেলেমেয়েরা যাতে স্কুলছুট হয়ে না পড়ে, তারা যাতে নিয়মিত স্কুল যায়, সে বিষয়ে সচেতন করলেন মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমামরা। হরিহরপাড়ার শ্রীপুর জুম্মা মসজিদের ইমাম মুফতি ইসরাইল, কেদারতলা মসজিদের ইমাম হাফিজ নাসিরুদ্দিন খান, ডোমকলের এক মসজিদের ইমাম মওলানা মুজাফফর খানরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিচার করেই তাঁরা এই বার্তা দিয়েছেন। তাঁদের কাছে খবর রয়েছে, অনেক পড়ুয়াই স্কুল খোলার পরে আর সে মুখো হয়নি।

শুধু তাই নয়, অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সচেতন করছেন ইমাম, মুয়াজ্জিনরা। প্রায় দেড় সপ্তাহ আগে খুলেছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার দরজা। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে নবম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। স্কুল খুলতেই দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষে কমেছে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির সংখ্যা।

হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকল -সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে সচেতনতা অভিযানে শামিল ইমাম, মুয়াজ্জিনরা। সারা জেলায় এই অভিযানে শামিল হতে উদ্যোগী অল ইন্ডিয়া ইমাম মুয়াজ্জিন ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন। বুধবার হরিহরপাড়ার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিনদের নিয়ে এই বিষয়ে একটি বৈঠকও হয় হরিহরপাড়া জামে মসজিদে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বহড়ান, কেদারতলা এলাকায় স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন সংগঠনের ব্লক সভাপতি মুফতি ইসরাইল। তিনি বলেন, ‘‘স্কুল, মাদ্রাসা খুলতেই বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি, পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কমেছে। ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়া, বাল্যবিবাহের ফলে স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়তে পারে। স্কুলছুট রুখতেই এই অভিযান।’’ মুফতি ইসরাইল, হাফেজ নাসিরুদ্দিন, মওলানা আজিজুল মণ্ডল, মওলা বক্সরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলেন পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে। কেদারতলা গ্রামের বাসিন্দা মহিদুল মণ্ডল বারুইপাড়া হাইস্কুলের ছাত্র। একই গ্রামের জসিমুদ্দিন মণ্ডল নিশ্চিন্তপুর হাইস্কুলের ছাত্র। এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে ইমামরা জানতে পারেন, স্কুলে যায়নি তারা। মহিদুল জানায়, ‘‘বাড়িতে ধানকাটার কাজ চলছে তাই স্কুল যাইনি। মওলানা সাহেবরা বাড়িতে এসেছিলেন। এর পরে যে দিন আমাদের ক্লাস আছে স্কুল যাব।’’ রাখি বিবি নামে এক অভিভাবিকা বলেন, ‘‘মেয়ে যাতে নিয়মিত স্কুল যায়, আমরা যাতে সাবালিকা হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে না দিই, সেই বিষয়ে ইমাম সাহেবরা বুঝিয়েছেন।’’

ইমাম মুয়াজ্জিন সংগঠনের জেলা সভাপতি মওলানা মুজাফফর খান বলেন, ‘‘স্কুলছুট, বাল্যবিবাহ, করোনার টিকা নিয়ে সচেতন করা আমাদের মূল লক্ষ্য। জুম্মার দিন বিভিন্ন মসজিদ থেকে ইমামরা সে বার্তা দিয়েছেন।’’ হরিহরপাড়ার বিডিও রাজা ভৌমিক বলেন, ‘‘ইমাম মুয়াজ্জিনদের বিভিন্ন সামাজিক কাজে একাধিক বার সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE