Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TET Scam

TET Scam: ‘তোরা কি আমাকে জেলে পাঠাবি?’ হাই কোর্টে মানিকের বিপক্ষে দুই প্রাক্তন ছাত্র, পক্ষেও দুই

এক সময় মানিকের কলেজের ছাত্র ছিলেন এই চার আইনজীবী। টেট মামলায় তাঁরাই শিক্ষকের হয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন। ফলে, এখন ছাত্ররাই ভরসা মানিকের।

আইনজীবী সুদীপ্ত সেনগুপ্ত, বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, রাতুল বিশ্বাস এবং শীর্ষাণু বন্দ্যোপাধ্যায়।

আইনজীবী সুদীপ্ত সেনগুপ্ত, বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, রাতুল বিশ্বাস এবং শীর্ষাণু বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২২ ২০:০৪
Share: Save:

দুই ছাত্র রক্ষা করছেন! আর অন্য দুই ছাত্র বিপক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন। প্রাক্তন শিক্ষক তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়ে এমনই ঘটনা দেখা গেল কলকাতা হাই কোর্টে। মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ছিল প্রাথমিক শিক্ষক দুর্নীতি মামলার শুনানি। কাকতালীয় ভাবে এই মামলার বাদী ও বিবাদী— দুই পক্ষের আইনজীবীই মানিকের ছাত্র।

মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে মানিক জানান, ১৯৮১ সাল থেকে তিনি শিক্ষকতা করছেন। সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজ এবং বিজয়গড় বিদ্যাপীঠে বাণিজ্য বিভাগে পড়াতেন তিনি। পরে ১৯৯৮ সালে যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের অধ্যক্ষ হন মানিক। ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন ওই পদে। আবার মানিক এই কলেজ থেকেই আইন নিয়ে পাশ করেছিলেন। মঙ্গলবারের শুনানিতে অংশ নেওয়া চার আইনজীবী রাতুল বিশ্বাস, শীর্ষাণু বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ্ত সেনগুপ্ত এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন মানিকেরই ছাত্র। যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের ২০০২-০৬ সালের ব্যাচের ছাত্র রাতুল। ২০০৪-০৯ নাগাদ ওই কলেজে পড়তেন সুদীপ্ত এবং বিক্রম। আর ২০০৫-১০ সালে শীর্ষাণু ওই কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হন রাতুল। অর্থাৎ, বর্তমানে হাই কোর্টের এই চার আইনজীবী মানিকেরই প্রাক্তন ছাত্র।

মানিকের প্রাক্তন এই চার ছাত্র শিক্ষা সংক্রান্ত মামলাই বেশি করেন বলে খবর। রাতুল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। শীর্ষাণু রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন। আর মামলাকারীদের আইনজীবী হলেন সুদীপ্ত এবং বিক্রম। আদালতের পূর্ব নির্দেশ মতো মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজিরা দেন মানিক। নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে তাঁকে এক গুচ্ছ প্রশ্ন করে হাই কোর্ট। পর্ষদের সদ্য অপসারিত সভাপতির পক্ষে একের এক যুক্তি সাজান রাতুল। রাজ্যের পক্ষে সেই ভূমিকায় দেখা যায় শীর্ষাণুকে। পাল্টা সেই যুক্তির খণ্ডন করছেন সুদীপ্তরা। মঙ্গলবার শিক্ষককে নিয়ে প্রাক্তন ছাত্রদের এই টানাপড়েন অবাক করেছে অনেকেই।

জানা গিয়েছে, শুনানি শেষে এজলাস থেকে বেরিয়ে এক আইনজীবীর উদ্দেশে কটাক্ষ করেন মানিক। তিনি বলেন, ‘‘তোরা কি সবাই আমাকে জেলে পাঠাবি? জেলে গেলে একটু বিশ্রাম পাব। জেলের ডাল-রুটি খাব।’’ প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয় এর আগেও স্কুলে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষক মানিকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছেন ছাত্র সুদীপ্তরা। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে সুসম্পর্কই রয়েছে। শিক্ষক হিসাবে তাঁকে আমি সম্মান ও সমীহ করি। কিন্তু এক জন আইনজীবী হিসাবে আমাকে আমার কাজ করতে হচ্ছে। যার ফলে তাঁর বা একটি সংস্থার বিরুদ্ধে সওয়াল করছি।’’ তবে এমন দৃশ্য দেখে অনেকেই বলছেন, এখন ছাত্ররাই ভরসা মানিকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE