প্রতীকী ছবি।
থানার সামনে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ। সোমবার নরেন্দ্রপুর থানার এই ঘটনার জেরে জেল-হাজতে বন্দি রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত জন পড়ুয়া। জামিন অযোগ্য ধারায় পড়ুয়াদের বন্দি থাকার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহলও। যাদবপুরের প্রাক্তনী দুই ছাত্রী বর্ষা বড়াল এবং সৌমী জানা বুধবার জামিন পেয়েছেন। তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, পুরুষ পুলিশ নির্বিচারে মেয়েদের বেধড়ক মারধর করে। অন্য দিকে, নরেন্দ্রপুর থানা তথা জেলার পুলিশ ওই প্রতিবাদীরাই মহিলা পুলিশকে পাল্টা মারধর করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন বলে দাবি করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য সরস্বতী পুজোর আগে সমাজমাধ্যমে শরদিন্দু উদ্দীপন নামে দলিত সমাজকর্মীর পোস্ট নিয়ে বিতর্ক। শরদিন্দু স্পর্শকাতর বা আপত্তিকর কিছু লিখেছেন বলে তাঁকে লেখা মুছতে বলে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। শরদিন্দুর দাবি, তিনি পুলিশের কথা শুনেওছিলেন। কিন্তু এর পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার পুলিশ তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে জোর করে থানায় ধরে নিয়ে যায়। থানায় তাঁকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এর পরে শরদিন্দুকে ছেড়ে দিলেও তাঁর বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে বিপজ্জনক উসকানির অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশের অবশ্য দাবি, শরদিন্দু থানায় বলে তাঁর লেখা মোছেন। সোমবার শরদিন্দু কোর্টে গিয়ে জামিন নেন। ঠিক সে-দিনই সিপিআই (এমএল)-এর মহিলা ও ছাত্র শাখা এবং বেশ কয়েকটি নাগরিক মঞ্চ নরেন্দ্রপুরে পুলিশের কাছে প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিল। ওই ছাত্রছাত্রীদের দাবি, পুলিশের অনুমতি নিয়ে বড়জোর ২০-২৫ জনের শান্তিপূর্ণ জমায়েতে লাঠি চালিয়ে বেধড়ক মারে পুলিশ। সিপিআই এমএল-এর রাজ্য কমিটির নেত্রী চন্দ্রাস্মিতা চৌধুরী বলে এক মহিলা বলেন, ‘‘পুলিশের ভয়ঙ্কর ভূমিকা দেখেছি। আমার পিরিয়ডস চলছিল। সেই অবস্থায় প্রচণ্ড মারের চোটে রক্তক্ষরণ বেড়ে যায়। তার পরেও মারধর, গালিগালাজ, অপমান চলতে থাকে।’’ চন্দ্রাস্মিতার দাবি, রাত দু’টো নাগাদ সম্ভবত কাহিল অবস্থা দেখে তাঁকে এবং আর এক নেতা মলয় তিওয়ারিকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। কিন্তু আরও ন’জনকে গ্রেফতার করে। যাঁরা জামিন পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সৌমী ও বর্ষাও পুলিশের কাছে মার খাওয়ার কথা বলেছেন। যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘গুটিকয়েক ছাত্রছাত্রীকে পুলিশ এমন অমানবিক ভাবে মারবে বা একটি সাধারণ প্রতিবাদের জন্য জামিন অযোগ্য ধারায় আটকে রাখবে, সেটা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক। পড়ুয়াদের পড়াশোনা, ভবিষ্যৎ এতে বিপন্ন হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে শিক্ষকেরা এই নিয়ে পদক্ষেপ করবেন।’’ আজ, শুক্রবার যাদবপুরের পড়ুয়াদের ফের কোর্টে তোলার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy