Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তা চেয়ে ভাঙচুর বর্ধমানে

চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিলেন পরিজনেরা। পুলিশ ডেকে সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরে ‘নিরাপত্তার অভাব’ বোধ করছেন, এই দাবিতে সুপারের ঘরে বিক্ষোভ, ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল কিছু জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:১৭
বর্ধমান মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র.।

বর্ধমান মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র.।

চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিলেন পরিজনেরা। পুলিশ ডেকে সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরে ‘নিরাপত্তার অভাব’ বোধ করছেন, এই দাবিতে সুপারের ঘরে বিক্ষোভ, ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল কিছু জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে। তা-ই নয়, দুপুর থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কাজ বন্ধ রেখে সুপার, ডেপুটি সুপার-সহ নানা আধিকারিককে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ফলে, লাটে ওঠে হাসপাতালের পরিষেবা।

বৃহস্পতিবার এমন ঘটনার নিন্দা করে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা কাম্য নয়। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ হাসপাতাল সুপার তথা মেডিক্যাল কলেজের উপ-অধ্যক্ষ উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট করা হবে। নির্দেশমতো পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’

সূত্রের খবর, মন্তেশ্বরের আকবরপুরে শনিবার ঈশান মল্লিক নামে বছর তিনেকের এক শিশুর শ্বাসনালিতে ধারালো কিছু আটকায়। প্রথমে তাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সোমবার বিকেলে তাকে বর্ধমান মেডিক্যালে আনা হয়। রাতে মৃত্যু হয় শিশুটির। শিশু বিভাগের প্রধান অশোক দত্তের বক্তব্য, ‘‘শিশুটিকে একেবারে শেষ অবস্থায় আনা হয়েছিল। বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়।’’ মঙ্গলবার সকালে শিশুর পরিজনেরা ফিরে গেলেও এ দিন দু’টি গাড়িতে ওই পরিবারের ‘ঘনিষ্ঠ’ জনা আঠেরো লোক হাসপাতালে আসেন। এক জুনিয়র ডাক্তারের অভিযোগ, ‘‘ওরা ইএনটি বিভাগে ভাঙচুর করে। আটকাতে গেলে আমাদের মারধর করে। এক সিনিয়র ডাক্তার-সহ পাঁচ জন আহত হন।’’

অভিযোগ মানেনি শিশুটির পরিবার। পুলিশের কাছে মৌখিক ভাবে তারা দাবি করেছে, বিক্ষোভ দেখাতে গেলে তাদের কয়েকজনকে মারধর করেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। পুলিশ দু’পক্ষের অভিযোগই খতিয়ে দেখছে। শিশুটির পরিবারের চার জনকে আটক করা হয়েছে।

সাড়ে ১২টা নাগাদ বিক্ষোভ শুরু করেন জনা পঞ্চাশ জুনিয়র ডাক্তার। ‘বারবার জুনিয়র চিকিৎসকদের উপরে হামলা হচ্ছে’ লিখে পোস্টার সাঁটানো হয়। সুপার বলেন, ‘‘পুলিশ ওই শিশুর পরিবারের চার জনকে আটক করেছে। তার পরেও চিকিৎসা বন্ধ রেখে কেন আন্দোলন, কেন আমার ঘরে ভাঙচুর হল, বুঝতে পারছি না!’’

ঘটনার জেরে জরুরি বিভাগ-সহ হাসপাতালের নানা বিভাগে দিনভর পরিষেবা ব্যাহত হয়। রাত পর্যন্ত সমস্যা মেটেনি। জরুরি বিভাগে ভর্তি বরুণ মাঝি, বিশ্বনাথ মালিদের অভিজ্ঞতা, ‘‘দুপুরের পর থেকে কোনও ডাক্তারের দেখা নেই।’’ রাতে শিশু বিভাগে ভর্তি থাকা রোগীদের পরিজনেরাও ডাক্তারের অভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন।

জুনিয়র ডাক্তারদের অবশ্য দাবি, চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রেখেই তাঁরা সরব হয়েছেন। হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে।’’

Burdwan Medical College Vandalism বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy