স্কুলে পড়ুয়া-শিক্ষক অনুপাতে বদলির আর্জি মঞ্জুর হওয়ার কথা নয়। কিন্তু অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসার কথা মাথায় রেখেই মামলাকারী শিক্ষিকাকে বদলির নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই নির্দেশ দিতে গিয়ে বার্টোল্ট ব্রেশটের কবিতার অনুবাদেরও উল্লেখ করে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ন্যায্য বিচার দিতে কখনও কখনও আইনের বাইরে বৃহত্তর সমাজ এবং জীবনের দর্শনকে বোঝা জরুরি। এই বদলির নির্দেশ না-দিলে এক জন অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার ক্ষতি হত, সে কথাও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি।
আদালতের খবর, মামলাকারী শিক্ষিকা উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার একটি প্রাথমিক স্কুলে পড়ান। তিনি বিবাহবিচ্ছিন্না এবং এক মেয়ের মা। তাঁর শিশুসন্তান একাধিক রোগে আক্রান্ত। বাড়ি থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কর্মস্থলে যাতায়াতের ফলে মেয়ের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। এই কারণেই তিনি একই জেলায় পৈতৃক বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে বদলির আবেদন জানিয়েছিলেন বলে তাঁর আইনজীবী উজ্জ্বল রায় কোর্টে উল্লেখ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতি নির্দেশ দিতে গিয়ে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেয়া চক্রবর্তীর অনুবাদ করা ওই কবিতাটির উল্লেখ করেন। নির্দেশের প্রতিলিপিতেও তার উল্লেখ আছে।
পুরো বিষয়টি শোনার পরেই বিচারপতি শিশুটির স্বার্থে তার মাকে বদলির নির্দেশ দেন। তিনি বলেছেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে ওই শিক্ষিকাকে যথাযথ স্কুলে বদলি করতে হবে। একইসঙ্গে বিচারপতি এ-ও বলেছেন যে ওই শিক্ষিকা বর্তমানে যে স্কুলে পড়াচ্ছেন তার ছাত্রছাত্রীরাও যেন এই বদলির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত না-হয় তাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে এবং বদলির ফলে তৈরি হওয়া শূন্যস্থানে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ২৮ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শককে (প্রাথমিক) কোর্টে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)