Advertisement
E-Paper

জেলের বাইরে আসার পর মমতা-বালু প্রথম মুখোমুখি, পরিষদীয় বৈঠকে প্রাক্তন মন্ত্রীর প্রতি দরাজ মুখ্যমন্ত্রী

জেল থেকে বার হওয়ার কয়েক দিন পর থেকেই নিয়মিত বিধানসভায় আসছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়াতেও ‘সক্রিয়তা’ বেড়েছে তাঁর অনুগামীদের।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১৫
Jyotipriya Mallick was detained unfairly, says CM Mamata Banerjee at Legislative Party meeting

(বাঁ দিকে)মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

টানা সাড়ে তিন মাস জেলে থাকার পরে গত ১৫ জানুয়ারি জামিন পেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জেলমুক্তির ২৬ দিনের মাথায় সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হল তাঁর। বিধানসভায় তৃণমূলের পরিষদীয় দলের বৈঠকে জ্যোতিপ্রিয়ের (বালু) মামলার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে বালুর নামোল্লেখ করে মমতা বলেন, তাঁকে ‘অন্যায়’ ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। নির্দিষ্ট কোনও প্রমাণও বালুর বিরুদ্ধে নেই বলে বৈঠকে জানিয়েছেন মমতা। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, বালুর সম্পর্কে দলের কোনও ‘নেতিবাচক’ মনোভাব নেই। যেমনটা ছিল না গরুপাচার মামলায় জেলে যাওয়া বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রেও। অনুব্রত যে দু’বছর জেলে ছিলেন, সেই সময়ে বীরভূমের জেলা সভাপতি বদল করেনি তৃণমূল। জেল থেকে ফেরার পরে অনুব্রতই সেই পদে বহাল রয়েছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও নিয়মিত দেখা যাচ্ছে তাঁকে।

বালুও জেল থেকে বার হওয়ার পরে কয়েক দিন পর থেকেই নিয়মিত বিধানসভায় আসছেন। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়াতেও ‘সক্রিয়তা’ বেড়েছে তাঁর অনুগামীদের। রবিবার বালু নিজেও হাবড়ায় গিয়েছিলেন। সেখানে অনুগামীরা তাঁকে সংবর্ধনাও জানান। তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে বালু ফের হাবড়ায় দাঁড়াবেন কি না, সেই জল্পনা উস্কে উঠেছে তাঁর অনুগামীদের কথাতেই।

মমতার সরকারের প্রথম দু’টি মেয়াদ খাদ্য দফতরের দায়িত্বে ছিলেন বালু। কিন্তু তৃতীয় মেয়াদে তাঁর দফতর বদল করা হয়। খাদ্য থেকে বালুকে পাঠানো হয় বন দফতরে। যদিও প্রাক্তন দফতরের দুর্নীতি মামলাতেই বালুকে জেলে যেতে হয়েছিল। উল্লেখ্য, গত বছর সেপ্টেম্বরের শেষে বালুর সল্টলেকের বাড়িতে যে দিন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) রেশন দুর্নীতি মামলায় ম্যারাথন তল্লাশি চালাচ্ছিল, সে দিনই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা। প্রকাশ্য কর্মসূচি থেকে বলেছিলেন, ‘‘বালুর ডায়াবেটিস আছে। ওর যদি কিছু হয়ে যায়, তা হলে দেখে নেব!’’ জেলে থাকাকালীনও বালু একাধিক বার অসুস্থ হয়েছিলেন। অবশেষে জানুয়ারি মাসে তিনি জামিন পান।

উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়েছিল নবান্ন। দলের মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে সাসপেন্ডও করেছিল তৃণমূল। কিন্তু জেলে যাওয়ার পরেও অনেক দিন বালুকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয়নি। পরে পরিবারের অনুরোধে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয় তাঁকে। কারণ, জেলে গিয়েও মন্ত্রিসভায় থেকে যাওয়াকে ‘অস্ত্র’ করে জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে আদালতে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব খাড়া করছিল ইডি। যা তাঁর জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায় হচ্ছিল।

পার্থ আর বালু যে এক নন, তা গোড়া থেকেই স্পষ্ট করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের অনেকের বক্তব্য, পার্থের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টি বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নোটের পাহাড়ের ছবি যে ভাবে প্রকাশ্যে এসেছিল, তার পরে দলের পক্ষে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। কিন্তু অনুব্রত বা বালু কারও ক্ষেত্রেই তেমন কিছু ঘটেনি। সোমবার মমতা আরও এক বার পরিষদীয় দলের সামনে বালু সম্পর্কে তাঁর মনোভাব স্পষ্ট করে দিলেন। যা থেকে এটা স্পষ্ট যে, আগামী বিধানসভা ভোটে দাঁড়ানো এবং তার পরে মন্ত্রিসভায় যোগদান নিয়ে বালুর অনুগামীরা আপাতত খানিকটা চিন্তামুক্ত থাকার অবকাশ পাবেন।

CM Mamata Banerjee Tmc Leader TMC MLA Jyotipriya Mallik West bengal Assembly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy