বাবুল সুপ্রিয়কে তোপ কবীর সুমনের। —ফাইল চিত্র।
বাবুল সুপ্রিয় শিবির বদলালেও তাঁর সুরে সুর মেলাচ্ছেন না সঙ্গীতশিল্পী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কবীর সুমন। সুপ্রিয়কে ‘প্রিয়’ হিসাবে ‘বরণ’ করছেন না সুমন। বরং লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-তে থাকা বাবুলের ভূমিকার কথা তুলে তাঁকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। তোপ দেগেছেন তৃণমূল শিবিরে থাকা আর এক সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী এবং কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
শনিবার বিজেপি শিবিরকে কিছুটা চমক দিয়েই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বাংলার শাসক দলের পতাকা হাতে তুলে নেন বাবুল। সেই তরঙ্গে গেরুয়া শিবির তো বটেই, আন্দোলিত তৃণমূলের একাংশও। পদ্ম ছেড়ে বাবুলের ঘাসফুলে যোগ দেওয়া নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন যাদবপুরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। বাবুলের সঙ্গে তাঁর সঙ্ঘাতের ইতিহাস তুলে ধরে সুমন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিজেপি সাংসদ ও মন্ত্রী শ্রীযুক্ত বাবুল সুপ্রিয় কিছু কাল আগে আমায় নিয়ে ফেসবুকে ঠাট্টা করেছিলেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে স্থূল ইঙ্গিত-পূর্ণ কথা লিখে। লিখেছিলেন ‘আপনার মমতাময়ী’। আমি তাঁকে কোনও কটূক্তি করিনি। আজ তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সশব্দে। তৃণমূলের বড় বড় নেতা তাঁকে বরণ করে নিয়েছেন। আমি তৃণমূলের সমর্থক। সদস্য নই। তৃণমূল দল কাকে টেনে নেবেন সেটা একান্তই তাঁদের ব্যাপার। শুধু, ‘আপনার মমতাময়ী’ বলে গায়ে পড়ে বিদ্রুপ করা এই মুসলিমবিদ্বেষী, এনআরসি পন্থী, বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষী বাবুল সুপ্রিয় মহোদয় এখন ‘তাঁর মমতাময়ী’ সম্পর্কে কী ভাবছেন তৃণমূলে তাঁর কাছের মানুষরা হয়তো জানতে চাইছেন।’
শুধু বাবুলই নন, সুমনের নিশানায় রয়েছেন আরও দু’জন। তিনি লিখেছেন, ‘আমাকে যাঁরা স্রেফ গায়ে পড়ে অপমান করে গেছেন, যেমন শ্রী নচিকেতা চক্রবর্তী এবং শ্রী শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়— তাঁদের সঙ্গে আর একটি নাম যুক্ত হল। এই তিন জনের এক জনকেও আমি অপমান বা আক্রমণ করিনি। তিন জনেই গায়ে পড়ে আমায় অপমান করেছেন। ২০০৫-০৬ সাল থেকে দীর্ঘকাল সিপিআই (এম) বিরোধী গণ আন্দোলনে সামিল ছিলাম। এঁরা?’ সুমন আরও লিখেছেন, ‘যা বুঝলাম যে যখন চাইবে আমায় অপমান করবে এই রাজ্যে। কিন্তু ইংরিজিতে একটা কথা আছে— ‘Every dog has his day.’ আমার দিনও আসবে। কোনও দল বা নেতারা যেন না ভাবেন আমি দুর্বল এবং একা। আমি দুর্বলও নই একাও নই। আত্মমর্যাদার ওপরে কিছুই নয়, কেউ নয়। ফেরত দিয়ে তবে মরব। আমার বয়স হয়ে গিয়েছে, কিন্তু এখনও দুর্বল নই। আমি একা নই। যা পেয়েছি তা ফেরত দিয়ে তবে মরব।’
সুমন-সুপ্রিয়ের সঙ্ঘাত নতুন নয়। এর আগে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের সময় বেনজির ভাবে তরজায় জড়িয়ে পড়েন দুই শিবিরের দুই গায়ক। সেই সময়ে দু’জনের মধ্যে তর্কবিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, যে সুমনকে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকে ব্লক করে দিয়েছেন বলে পোস্ট করেন বাবুল। সেই ইতিহাস তুলে ধরেই তৃণমূলে যোগ দেওয়া বাবুলকে তোপ দেগেছেন সুমন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy