Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Science

গবেষণায় সরকারি সহায়তা বাড়ুক, আর্জি কালিদাসের

প্রতি বছরই সারা বিশ্বে ‘থিয়োরিটিক্যাল’ ও ‘এক্সপেরিমেন্টাল’ গবেষণা নিয়ে আমেরিকার স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষা থেকে বেছে নেওয়া হয় বিশ্বের সেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞানী-গবেষককে।

কালিদাস দাস। নিজস্ব চিত্র

কালিদাস দাস। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার, অমিত মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২১
Share: Save:

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত বিশ্বের সেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞানী-গবেষকের তালিকায় পর পর তিন বছর জায়গা হয়েছে তাঁর। নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের গণিতের সেই শিক্ষক কালিদাস দাসের কথায় কিন্তু শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা না-মেলায় আক্ষেপ।

কালিদাস নিজের খরচেই গবেষণা করেছেন। শুক্রবার কল্যাণীর বাড়িতে বসে তিনি বলেন, “এই ধরনের গবেষণার ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা কমার বদলে বাড়লে আরও অনেক গবেষক উঠে আসবেন। আরও ভাল ভাল কাজ হবে।”

প্রতি বছরই সারা বিশ্বে ‘থিয়োরিটিক্যাল’ ও ‘এক্সপেরিমেন্টাল’ গবেষণা নিয়ে আমেরিকার স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষা থেকে বেছে নেওয়া হয় বিশ্বের সেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞানী-গবেষককে। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গবেষণাপত্রের মান, গবেষণাপত্র কোন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, গবেষণাপত্রে যোগদান বা লেখক হিসাবে গবেষকের কত নম্বরে নাম রয়েছে, গবেষণাপত্রের ‘সাইটেশন’, ‘এইচ-ইন্ডেক্স’ কত ইত্যাদি। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সেই তালিকায় ভারতের মোট ৩৭৯৬ জন বিজ্ঞানী-গবেষকের মধ্যে রাজ্যের একমাত্র সরকারি কলেজ শিক্ষক হিসাবে কালিদাসেরও নাম রয়েছে।

গণিতের শিক্ষক কালিদাসের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৪ সালে স্কুলশিক্ষক হিসেবে। ২০০১ সালে সরকারি মহাবিদ্যালয়ে যোগ দেন। কল্যাণী গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও কোচবিহার আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল সরকারি মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পর বর্তমানে কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। দেশে-বিদেশে তাঁর ১৪২টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। মূলত গাণিতিক ‘মডেলিংয়ের উপর তাত্ত্বিক গবেষণা করছেন তিনি। বিষয় ‘ন্যানো ফ্লুইড’। গরম যন্ত্রাংশ ঠান্ডা করতে এই তরল পদার্থ ব্যবহার করা হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি ন্যানো ফ্লুইডের ওপর গবেষণা শুরু করেন।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অনেক কলেজ শিক্ষকই জানাচ্ছেন, বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণার জন্য কিছুটা সরকারি অর্থ সহায়তা পেলেও কলেজ স্তরের শিক্ষকেরা গত কয়েক বছর ধরে প্রায় কোনও আর্থিক সহায়তাই পাননি। ফলে এই ধরনের গবেষণার ক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গবেষক বলেন, ‘‘কালিদাসবাবু নিজের খরচে গবেষণা করছেন। তাঁর মতো প্রতিভাময় বিজ্ঞানীকে কেন গ্যাঁটের কড়ি ফেলে গবেষণা করতে হবে, সে বিষয়ে সরকারের ভাবা দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Science Research
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE