স্ত্রীকে খুনে দোষী সাব্যস্ত নীলু বাগ। —নিজস্ব চিত্র।
পণের দাবিপূরণ না করায় নোড়া দিয়ে স্ত্রীর মাথা থেঁতলে দিয়েছিলেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখানেই মৃত্যু হয় এক তরুণীর। বছর পাঁচেক আগেকার এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ওই তরুণীর স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাবাসে সাজা দিল পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার এক আদালত। পাশাপাশি, দোষীর দশ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। মঙ্গলবার কালনা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সুধীর কুমার এই সাজা ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্ত্রীকে খুনে দোষী সাব্যস্ত নীলু বাগের বাড়ি কালনা থানার আনোকা গ্রামে। কালনার কৃষ্ণদেবপুরের পিয়ালী সাঁতরা ওরফে মালার সঙ্গে নীলুর বিয়ে হয়েছিল। আদালতের সরকারি পক্ষের আইনজীবী মলয় পাঁজার দাবি, বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে পণের টাকা নিয়ে আসার জন্য পিয়ালিকে চাপ দিতেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি, পিয়ালির উপর অত্যাচার চালাতেন তাঁরা। শেষমেশ শ্বশুরবাড়ির চাপে পড়ে বাপের বাড়ি থেকে এক বার টাকা আনতে গিয়েছিলেন পিয়ালি। তবে টাকা ছাড়াই শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসতে হয় তাঁকে। ২০১৭ সালে ১৭ অক্টোবর বোনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি ফিরে এসেছিলেন। ওই রাতে পিয়ালির বোনকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জল খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল নীলুর পরিবার। এর পর পিয়ালির উপর অমানুষিক অত্যাচার করেছিলেন নীলু এবং তাঁর মা-দিদিমা। অভিযোগ, নোড়া দিয়ে পিয়ালির মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পিয়ালিকে প্রথমে বৈদ্যপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই মৃত্যু হয় পিয়ালির।
কালনা আদালতের সরকারি পক্ষের আইনজীবী মলয় পাঁজা জানিয়েছেন, পিয়ালিরা মৃত্যু নিয়ে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ নীলুকে গ্রেফতার করে। বেশ কয়েক বছর ধরে সেই মামলার বিচার চলে। চিকিৎসক, পুলিশ-সহ মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর নীলুকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। মঙ্গলবার নীলুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy